তৃণমূল নেতা আবুল নাসার মৃত্যু নিয়ে নয়া অভিযোগ স্ত্রীর। চাইছেন সিবিআই তদন্ত। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
মন্দারমণি বেড়াতে গিয়ে মৃত তৃণমূল নেতা আবুল নাসারের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। স্বামীর মৃত্যুর ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙার আদাহাটা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সুরাইয়া পরভিন। তাঁর অভিযোগ, পুলিশ ‘আসল ঘটনাকে’ আড়াল করার চেষ্টা করছে। পাশাপাশি, স্বামীর মৃত্যুর ঘটনায় ধৃত যুবককে ‘নিরীহ’ এবং ‘নিজের লোক’ বলে দাবি করলেন তিনি। এমনকি, হোটেলের ঘরে মদের আসর বসেছিল বলে যে তথ্য উঠে এসেছে, তার প্রেক্ষিতে উপপ্রধান দাবি করেছেন আবুল মদ ছুঁতেনই না। তাঁর কেবল সিগারেটের নেশা ছিল। সুরাইয়ার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত সঠিক পথেই এগোচ্ছে। আরও বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে।
তৃণমূল নেতার মৃত্যুর পর চার দিন কেটেছে। রহস্য এখনও জারি। পুলিশ এখনও ধৃত যুবতীর ‘মামু’কে খুঁজে পায়নি। তৃণমূল নেতার স্ত্রীর দাবি, ‘মামু’ই আসল মাথা। স্বামীর দেহ কবর দেওয়ার পরে মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘খুনের ঘটনাকে বিপথে চালিত করার চেষ্টা হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, ধৃত যুবতীর মামা উত্তর ২৪ পরগনার একজন প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা। ব্যবসায়িক স্বার্থে তাঁর স্বামীকে খুন করিয়েছেন ওই জমি কারবারি নেতা। পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘‘যে যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে, তিনি নিরীহ। তিনি আমাদের কাছের লোক। প্রভাবশালী ‘মামু’কে বাঁচাতে ওঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে।’’ পুলিশ অবশ্য ওই অভিযোগ খণ্ডন করে পুলিশ জানিয়েছে, পরিবারের অভিযোগ এবং ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ‘পলাতক’ এক জনকে (ধৃত যুবতীর মামা) গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে। সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত এগোচ্ছে।
অন্য দিকে, মঙ্গলবার বেশ কিছু নতুন দাবি এবং অভিযোগ করেছেন মৃত তৃণমূল নেতার স্ত্রী সুরাইয়া। তিনি বলেন, ‘‘আমার স্বামী কোনও দিন মদ্যপান করতেন না। পুলিশ মদ্যপানের যে দাবি করছে, সেটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং তৈরি করা গল্প। যিনি মাস্টারমাইন্ড, তাঁকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ওই যুবক (ধৃত)-কে আমি পাঠিয়ে ছিলাম। ও আবুলের খেয়াল রাখত। মামু তাঁর ভাগ্নিকে দিয়ে পুরো কাণ্ডটি ঘটিয়েছে। ছেলেটি নির্দোষ।’’ মন্দারমণিকাণ্ডের তদন্তপ্রক্রিয়া নিয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শুভেন্দ্র কুমার বলেন, ‘‘মৃত ব্যক্তির মায়ের করা অভিযোগে ধৃত যুবকের নাম রয়েছে। এফআইআরে নাম থাকা ব্যক্তিকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হচ্ছে। পলাতক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।’’