সিভিক ভলান্টিয়ার দিয়ে পুলিশের ঘাটতি মেটানো হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতি মান্থা। ফাইল চিত্র ।
পুলিশে নিয়োগ নিয়ে আরও উদ্যোগী হওয়া উচিত রাজ্য সরকারের। শুধুমাত্র সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করে সমস্যা মিটবে না। বৃহস্পতিবার রাজ্যকে এমনটাই বার্তা দিল কলকাতা হাই কোর্ট। এই বার্তা দেওয়ার সময় হাই কোর্টের বিচারপতির মুখে উঠে এল আনিস খান মৃত্যু প্রসঙ্গও।
বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা বলেন, ‘‘রাজ্যের আসল সমস্যা হল পুলিশে নিয়োগ না করা। ফলে চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের উপর ভরসা করতে হচ্ছে। পুলিশের কাজ সিভিক ভলান্টিয়াররা করছে। কনস্টেবল, এসআই এবং এএসআই নিয়োগ করা না হলে উপায়ও নেই।’’
বিচারপতি মান্থা আরও বলেন, ‘‘দুর্ভাগ্যের বিষয় আনিস খানের মৃত্যুর ঘটনাতেও দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ার ওই রাতে তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন।’’
সিভিক ভলান্টিয়ার দিয়ে পুলিশের ঘাটতি মেটানো হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতি মান্থা। তিনি বলেন, ‘‘অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, পুলিশের ঘাটতি মেটাচ্ছে সিভিক ভলান্টিয়ার। তাই পুলিশে নিয়োগ না করলে এ ভাবে চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের দিয়ে নিচু তলার আইনশৃঙ্খলার চেষ্টা করা হলে সমস্যা বাড়বে বই কমবে না।’’
কয়েক দিন আগে এক যুবককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে বেহালার সরশুনা থানার বিরুদ্ধে। পরিবারের অভিযোগ, দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ার ওই যুবককে তুলে নিয়ে যায়। সঙ্গে ছিল পুলিশও। তার পর থেকে আর ওই যুবকের খোঁজ পাওয়া যায়নি। উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয় যুবকের পরিবার। এর পর সিভিক ভলান্টিয়ারদের দায়িত্ব বেঁধে দিয়ে রাজ্য পুলিশকে নির্দেশিকা তৈরির নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে সিভিক ভলান্টিয়ারদের কী ভূমিকা রয়েছে এবং কোন কোন কাজে তাঁদের ব্যবহার করা হয়, সে প্রসঙ্গেও রাজ্য পুলিশের কাছে জানতে চেয়েছিল আদালত।
কলকাতা হাই কোর্টের সেই নির্দেশের পরই সিভিক ভলান্টিয়ারদের জন্য নতুন নির্দেশিকা জারি করে রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টরেট। সিভিক ভলান্টিয়ারদের কী কাজ করতে হবে, তা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। এ-ও জানিয়ে দেওয়া হয়, কোনও আইন প্রয়োগ তাঁরা করতে পারবেন না। শুধুমাত্র পুলিশকে সাহায্য করতে পারবেন।
এর পর বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানির দিন পুলিশ নিয়োগ নিয়েও রাজ্যকে উদ্যোগী হওয়ার বার্তা দিল কলকাতা হাই কোর্ট।
অতীতেও সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে একাধিক অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। সিভিক ভলান্টিয়ারদের বিরুদ্ধে ‘দাদাগিরি’র অভিযোগ এনেছেন সাধারণ মানুষ।