মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ছবি পিটিআই।
নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের চারটি বিল্ডিংয়ে নন-কোভিডের চিকিৎসায় স্বাস্থ্য দফতর যে ছাড়পত্র দিতে চলেছে বুধবার রাতে স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে তা জানা গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য দফতরের ‘প্ল্যান অব অ্যাকশন’ নির্দেশিকা আকারে প্রকাশ্যে আসতেই গত এক সপ্তাহ ধরে চলা অবস্থান-বিক্ষোভ প্রত্যাহার করে নিলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র চিকিৎসকেরা।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে শুধুমাত্র কোভিডের চিকিৎসা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেই সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়ে কোভিডের পাশাপাশি নন-করোনা রোগীদের চিকিৎসার দাবিতে গত ১ জুলাই থেকে অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। তাঁদের বক্তব্য ছিল, কোভিড পরিস্থিতি কবে শেষ হবে, সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে কোভিডের চিকিৎসার সঙ্গে যে সকল চিকিৎসক ছাত্রছাত্রীর সরাসরি সম্পর্ক নেই, তাঁদের পঠনপাঠনের কী হবে?
এই পরিস্থিতিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনার পরিসর তৈরি করতে সক্রিয় ভূমিকা নেন তৃণমূলের চিকিৎসক নেতা শান্তনু সেন। যার প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য ভবনে দীর্ঘ বৈঠকের পরে আট সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটির সুপারিশ সামনে আসার আগে বুধবার মেডিক্যাল কলেজের বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক
করেন মুখ্যমন্ত্রী। রাতে স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা যায়, বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ হল এমসিএইচ, ডিএইচি, এজরা এবং শ্যামাচরণ ল ইনফার্মারি
বিল্ডিং করোনা রোগীদের ভর্তি করার পক্ষে উপযুক্ত নয়। তাই ওই বিল্ডিংগুলিতে নন-করোনা রোগী ভর্তির ক্ষেত্রে বাধা নেই। সিবি বিল্ডিংকে কোভিড রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহারে মত দেয় বিশেষজ্ঞ কমিটি। কোভিড এবং নন-কোভিড রোগীদের চিকিৎসা যে হেতু একসঙ্গে হবে, তাই হাসপাতালের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ কমিটিকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও সুপারিশে বলা হয়।
কমিটির সুপারিশ মেনে নির্দেশিকা জারি করে স্বাস্থ্য দফতর। এর পর এ দিন সকালে অধ্যক্ষা নন-কোভিড রোগীদের অন্তর্বিভাগ এবং বহির্বিভাগ পরিষেবা চালু সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি দেওয়া মাত্র আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। নন-কোভিড রোগীদের চিকিৎসার পাশাপাশি গ্রিন বিল্ডিংয়ে শীতাতপ যন্ত্র না থাকায় একটানা পিপিই পরে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। এ ছাড়া ইডেন বিল্ডিংয়ে কোভিড রোগী ভর্তি হলেও চিকিৎসক পডুয়াদের হস্টেল যেখানে রয়েছে সেখানে করোনা রোগী ভর্তি না করার কথা বলেছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। এই দুই সমস্যারই সমাধান করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানান অধ্যক্ষা।
এ দিন রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান নির্মল মাজি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী হস্তক্ষেপে সহমতের ভিত্তিতে সমস্যার সমাধান সম্ভব হয়েছে। কোভিড রোগীদের চিকিৎসায় মেডিক্যাল কলেজ তার সুনাম বজায় রাখার প্রশ্নে বদ্ধপরিকর।’’