রাজ্যের কোন স্কুলে কত পড়ুয়া রয়েছে, কত শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী রয়েছেন, সে বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছে শিক্ষা দফতর। —ফাইল চিত্র।
পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত কোন স্কুলে কত জন পড়ুয়া রয়েছে? কোথায় কত জন শিক্ষক রয়েছেন, শিক্ষাকর্মীর সংখ্যাই বা কত? কোন স্কুলে কত শূন্যপদ রয়েছে? সে বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ শুরু করল শিক্ষা দফতর। প্রত্যেক স্কুলের প্রধানশিক্ষক এ বিষয়ে রিপোর্ট জমা দেবেন জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে। তার পর সেই রিপোর্ট জমা পড়বে বিকাশ ভবনে।
রাজ্যে বেশ কিছু সরকারি স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে কমে গিয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে। অনেক ক্ষেত্রে স্কুলে পড়ুয়া সংখ্যা অনেক কম থাকলেও আনুপাতিক হারে শিক্ষকের সংখ্যা বেশি। আবার কোথাও পড়ুয়া বেশি থাকলেও শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীর সংখ্যা তুলনায় কিছুটা কম। এই অবস্থায় প্রতিটি স্কুলের কোথায় কী পরিস্থিতি, তা জেনে নিতে চাইছে শিক্ষা দফতর। একটি নির্দিষ্ট ফর্মও পাঠানো হচ্ছে স্কুলগুলিকে। পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়ার সংখ্যা জানতে চাওয়া হয়েছে। একাদশ এবং দ্বাদশ বিষয়ভিত্তিক (কলা এবং বিজ্ঞান) পড়ুয়ার সংখ্যাও জানাতে বলেছে শিক্ষা দফতর। একই সঙ্গে কোন স্কুলে কত শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর অনুমোদিত পদ রয়েছে, বর্তমানে কত জন সেই স্কুলে রয়েছেন, কতগুলি শূন্যপদ রয়েছে— তা-ও জানতে চেয়েছে বিকাশ ভবন। কবে থেকে ওই পদগুলি ফাঁকা রয়েছে, সেটিও স্কুলগুলিতে জানাতে বলা হয়েছে।
রাজ্যের কোন স্কুলে ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত কী রকম রয়েছে, সে বিষয়ে বিকাশ ভবনের হাতে আগে থেকেই একটি অভ্যন্তরীণ হিসাব রয়েছে। বিকাশ ভবন সূত্রে খবর, প্রায় ২৫০ স্কুলে ছাত্র ভর্তির হার প্রায় শূন্য। অথচ সেগুলিতে পাঁচ-ছয় জন করে শিক্ষক রয়েছেন। পড়ুয়া সংখ্যার হিসাবে রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে প্রায় ১২০০ শিক্ষক বেশি রয়েছেন। সূত্রের খবর, যে স্কুলগুলিতে আনুপাতিক হারে অতিরিক্ত শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী রয়েছেন, তাঁদের প্রয়োজন অনুসারে বদলির ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে। বিশেষ করে যে স্কুলগুলিতে ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত তুলনায় কম রয়েছে, সেখানে তাঁদের বদলির কথা ভাবছে শিক্ষা দফতর।
বিকাশ ভবন সূত্রে খবর, সাধারণত কোনও স্কুলে প্রতি ৪০ জন পড়ুয়াপিছু এক জন শিক্ষক থাকলে, সেটি আদর্শ ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত ধরা হয়। তবে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ১১০-১২০ জন পড়ুয়াপিছু এক জন শিক্ষক থাকলেও সেটিকে আদর্শ অনুপাত হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এই অবস্থায় কোথায় কী পরিস্থিতি রয়েছে, সে বিষয়ে স্কুলভিত্তিক রিপোর্ট পেতে উদ্যোগী হল বিকাশ ভবন।
ঘটনাচক্রে বিকাশ ভবন যখন এই পদক্ষেপ করছে, তখন এসএসসির মাধ্যমে প্রায় ২৬ হাজার জনের চাকরি সংক্রান্ত মামলা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। পুরো প্যানেল বাতিল হবে? নাকি প্যানেলের একাংশ বাতিল হবে? তা নিয়ে শুনানি চলছে শীর্ষ আদালতে। আগামী মঙ্গলবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।