নিয়ম মেনে তৈরি হয়নি পার্থ চট্টোপাধ্যাযের অনুমতি নিয়ে তৈরি কমিটি। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ
এসএসসি-র গ্রুপ-ডি নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে। চাকরি পাওয়া ৬০৯ জনের নিয়োগও বেআইনি। বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি আনন্দকুমার মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে রিপোর্ট পেশ করে এমনটাই জানাল রঞ্জিতকুমার বাগের নেতৃত্বে তৈরি বিশেষ অনুসন্ধান কমিটি। পাশাপাশি, তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অনুমতি নিয়ে এসএসসি এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে পাঁচ সদস্যের যে উপদেষ্টা কমিটি তৈরি হয়েছিল, তাকেও অনুসন্ধান কমিটি বেআইনি বলে জানিয়েছে। ডিভিশন বেঞ্চ থেকে বেরিয়ে এ কথা জানালেন অনুসন্ধান কমিটির সদস্য তথা আইনজীবী অরুণাভ বন্দ্যোপাধ্যায়।
ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, এসএসসি-র তৎকালীন প্রোগ্রাম অফিসার সমরজিৎ আচার্য এবং উপদেষ্টা কমিটির প্রধান শান্তিপ্রসাদ সিন্হা নিয়োগের ভুয়ো সুপারিশপত্র তৈরি করেছিলেন। তাই তাঁদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ধারায় মামলা দায়ের করা উচিত বলেও আদালতকে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ও এই দুর্নীতিতে সরাসরি যুক্ত বলেই জানিয়েছেন অনুসন্ধান কমিটির সদস্যরা। তদন্তকারীদের দাবি, শান্তিপ্রসাদ ভুয়ো সুপারিশপত্রগুলি কল্যাণময়কে পাঠানোর পর তিনিই নিয়োগপত্র দিতেন। এসএসসি-র তৎকালীন চেয়ারম্যানকে অন্ধকারে রেখেই এই সুপারিশপত্র দেওয়া হত বলেও জানানো হয়েছে।
একই সঙ্গে এসএসসি-র পাঁচ অধিকর্তা সুবীরেশ ভট্টাচার্য, শর্মিলা মিত্র, মহুয়া বিশ্বাস, শুভজিৎ চট্টোপাধ্যায়, শেখ সিরাজউদ্দিনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত এবং শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে পদক্ষেপ করা উচিত বলেও ডিভিশন বেঞ্চে রিপোর্ট দিয়ে জানাল বিচারপতি বাগের কমিটি। তবে, প্রাথমিক ভাবে রাজ্য সরকার এই বিষয়ে যুক্ত নেই বলেও কমিটির তরফে জানানো হয়েছে।
পাশাপাশি, গ্রুপ-সি দুর্নীতি নিয়েও তদন্তভার দেওয়া হয়েছিল বিচারপতি বাগের কমিটিকে। কিন্তু প্রাক্তন বিচারপতি বাগ গ্রুপ-সি দুর্নীতির তদন্তে থাকবে না বলেও সোমবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
মামলার শুরুতে এসএসসি এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ একে অপরের দিকে দায় চাপাচ্ছিল। তবে দায় যে দু’পক্ষেরই তা এই দিন স্পষ্ট করে জানায় বিচারপতি বাগের কমিটি।
এর আগে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে এসএসসি-র শিক্ষক নিয়োগ মামলা থেকে সরে দাঁড়ান কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি হরিশ টন্ডন। এসএসসি-র শিক্ষক নিয়োগ মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বিচারপতি টন্ডন এবং বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিল রাজ্য। বিচারপতি সরে দাঁড়ানোয় প্রধান বিচারপতির দ্বারস্থ হয় রাজ্য।
ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি হরিশ টন্ডন সরে দাঁড়ানোয় প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের এজলাসে আবেদন জানায় রাজ্য। তার পর মামলাটি বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চে পাঠান প্রধান বিচারপতি।