পার্থ চট্টোপাধ্যায়, কল্য়াণময় গঙ্গোপাধ্যায় ও শান্তিপ্রসাদ সিন্হা।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত এসএসসি-র প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিন্হাকে আবারও হেফাজতে নিল সিবিআই। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। শনিবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় শান্তিপ্রসাদকে আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে তোলা হয়েছিল।
সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে। ঘটনাচক্রে, কল্যাণময়ের গ্রেফতারের পর এই মামলায় আগেই গ্রেফতার হওয়া রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে হেফাজতে নিয়েছে সিবিআই। এই প্রেক্ষাপটে শান্তিপ্রসাদকে আবারও নিজেদের হেফাজতে নিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ঘটনাক্রম যে পথে এগোচ্ছে, তাতে পার্থ, কল্যাণময় ও শান্তিপ্রসাদকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হতে পারে বলে সূত্রের খবর।
নিয়োগপত্র কার নির্দেশে দেওয়া হয়েছিল? নিয়োগপত্র নিয়ে তাঁদের কী ভূমিকা ছিল? এ নিয়ে জানতে চায় সিবিআই। এ জন্য তিন জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরার ভাবনাও রয়েছে বলে সূত্রের খবর। এই সংক্রান্ত মামলায় সিবিআই যে এফআইআর দায়ের করেছিল, তাতে প্রথম নামই ছিল শান্তিপ্রসাদের। সিবিআই সূত্রে জানা যায়, জিজ্ঞাসাবাদে অসঙ্গতি মেলার পরই শান্তিপ্রসাদকে গ্রেফতার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। হাই কোর্ট নিযুক্ত বাগ কমিটির রিপোর্টেও শান্তিপ্রসাদের নাম ছিল। তদন্তে শান্তিপ্রসাদ অসহযোগিতা করছেন বলে শনিবার আদালতে অভিযোগ করেছে তদন্তকারী সংস্থা।
এর আগে, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ‘এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট’ (ইডি) গ্রেফতার করেছে রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে। ইডির তল্লাশিতে টালিগঞ্জ ও বেলঘরিয়ার অর্পিতার দু’টি ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা নগদ উদ্ধার হয়। পাওয়া যায় সোনাও। এ ছাড়াও একাধিক নথি থেকে পার্থ-অর্পিতার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বহু সম্পত্তির হদিস পান তদন্তকারীরা। বর্তমানে জেল হেফাজতে রয়েছেন অর্পিতা। পার্থও জেলে বন্দি ছিলেন। শুক্রবার তাঁকে হেফাজতে নিয়েছে সিবিআই।
নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়েছে দুই ‘মিডলম্যান’ প্রসন্নকুমার রায় ও প্রদীপ সিন্হাকে। সূত্রের খবর, ধৃত ‘মিডলম্যান’ প্রসন্নের সংস্থার গাড়ি শিক্ষা দফতরে ব্যবহার করা হত বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিন্হার দফতরেও প্রসন্নের সংস্থার গাড়ি ব্যবহার করা হত বলে সূত্রের দাবি। এই প্রেক্ষাপটে শান্তিপ্রসাদকে হেফাজতে নিয়ে আরও তথ্য জানতে চান তদন্তকারীরা।