কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে এই মামলাটি গৃহীত হয়েছে। প্রতীকী ছবি।
উত্তরপত্রে কারচুপির অভিযোগে নবম-দশম শ্রেণির ৬১৮ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরির সুপারিশপত্র বাতিল করেছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। তার ভিত্তিতে মার্চের গোড়ায় চাকরি গিয়েছিল ওই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। যে আইনবলে এ হেন পদক্ষেপ করা হয়েছিল, এসএসসির সেই ১৭ নম্বর ধারাকে চ্যালেঞ্জ করে শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্টে মামলার আবেদন জমা পড়ল।
কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে এই মামলাটি গৃহীত হয়েছে। আবেদনকারীদের মধ্যে রয়েছেন এসএসসির পরীক্ষা দিয়ে চাকরি খোয়ানো হাসানুর জামান-সহ বহু শিক্ষক। আবেদনকারীদের দাবি, এসএসসির ওই আইন প্রয়োগের ফলে বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা চাকরি হারিয়েছেন। আইনের ওই অংশটিকে অবৈধ ঘোষণা করা হোক।
১৭ নম্বর ধারা প্রয়োগ করে যে কারও চাকরির সুপারিশপত্র বাতিল করার ক্ষমতা রয়েছে এসএসসির। এমনকি, ওই আইনবলে চাকরিপ্রার্থীকে জবাবদিহি করার ক্ষেত্রেও বাধ্যবাধ্যকতা নেই তাদের। এসএসসির সুপারিশের ভিত্তিতেই নিয়োগপত্র বাতিল করতে পারে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নবম-দশম শ্রেণির ৯৫২ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার বিরুদ্ধে উত্তরপত্র (ওএমআর শিট)-এ কারচুপি করে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। এই মামলাটি বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর একক বেঞ্চে গেলে তিনি ওই ৯৫২ জনের মধ্যে ৮০৫ জনের চাকরির সুপারিশপত্র বাতিল করে তাঁদের বরখাস্ত করার নির্দেশ দেন এসএসসিকে। ইতিমধ্যেই ওই ৮০৫ জনের উত্তরপত্রে দুর্নীতির কথা স্বীকার করে নিয়েছে এসএসসি। এর পর ৬১৮ জনের নাম প্রকাশ করে তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার কথা ঘোষণা করে তারা। এসএসসি তাঁদের সুপারিশপত্র বাতিল করলে ওই ৬১৮ জনের চাকরির নিয়োগপত্র খারিজ করে পর্ষদ। এর জেরে মার্চের গোড়ায় চাকরি যায় ওই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। তাঁদের মধ্যে অনেকেই এসএসসির এই আইনকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।
এই আবেদন গৃহীত হওয়ার পর শুক্রবার এসএসসি, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পাশাপাশি, রাজ্য সরকারকেও এ বিষয়ে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। এ ছাড়া, সব পক্ষকেই নিজেদের মধ্যে সেই হলফনামা আদানপ্রদানের নির্দেশও দিয়েছেন বিচারপতি। আগামী ৩ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে বলে আদালত সূত্রে খবর।