Manmohan Singh

মধ্যরাতের একটি ফোনে বদলে গিয়েছিল জীবন, ইউজিসির মাথা মনমোহন প্রবিষ্ট হলেন রাজনীতিতে

নেদারল্যান্ডস সফররত মনমোহনের হোটেলে মধ্যরাতে হঠাৎই বেজে উঠল ফোন। আর সেই ফোনই রাতারাতি রাজনীতির আঙিনায় নিয়ে আসে ‘অরাজনৈতিক’ মনমোহন সিংহকে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৫:১৬
Share:

মনমোহন সিংহ। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর চেয়ারম্যান হিসাবে নেদারল্যান্ডসে গিয়েছেন মনমোহন। একটি সম্মেলনে বক্তৃতা করে হোটেলে ফিরে বিশ্রাম করছেন তিনি। মধ্যরাতে হঠাৎই বেজে উঠল ফোন। আর সেই ফোনই রাতারাতি রাজনীতির আঙিনায় নিয়ে এল ‘অরাজনৈতিক’ মনমোহনকে।

Advertisement

ফোনের ও পারে ছিলেন দেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসিংহ রাওয়ের প্রধান সচিব পিসি আলেকজ়ান্ডার। মনমোহনকে তিনি স্পষ্টই জানালেন যে, অর্থমন্ত্রী হিসাবে তাঁকে নিজের মন্ত্রিসভায় চাইছেন প্রধানমন্ত্রী পিভি। কন্যা দমন সিংহের বই ‘স্ট্রিক্টলি পার্সোনাল: মনমোহন অ্যান্ড গুরশরণ’-এ মনমোহন এই প্রসঙ্গে বলছেন, “উনি (আলেকজ়ান্ডার) আমাকে মজা করে বললেন যে, যদি সব কিছু ঠিক ভাবে এগোয়, তবে সব কৃতিত্ব আমাদের। আর যদি তা না-হয় তবে আপনাকে সরিয়ে দেওয়া হবে।”

পিভির মন্ত্রিসভায় যোগ দিতে রাজি হয়েছিলেন রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর মনমোহন। ১৯৯১ সালের ২১ জুন দেশবাসীকে তো বটেই, কংগ্রেসের বহু নেতাকে অবাক করে দিয়ে রাষ্ট্রপতি ভবনে অর্থমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছিলেন তিনি। বাকিটা ইতিহাস।

Advertisement

দেশ এবং বিশ্ব অর্থনীতির এক টালমাটাল সময়ে অর্থনীতির হাল ধরেছিলেন মনমোহন। পিভির জমানায় অর্থমন্ত্রী হিসাবে দেশের আর্থিক সংস্কার কর্মসূচির সঙ্গে একাকার হয়ে গিয়েছে মনমোহনের নাম। অর্থনীতির সব গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে পুরোদস্তুর সরকারি নিয়ন্ত্রণ সরিয়ে বেসরকারি পুঁজি, ক্ষেত্রবিশেষে বিদেশি পুঁজিকেও জায়গা করে দেওয়ার রাস্তা তৈরি হয়েছিল মনমোহনের হাতে। পাঁচ বছর অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন তুমুল বিতর্কের কেন্দ্রে ছিলেন তিনি। এক দিকে প্রবল নিন্দা আর প্রতিবাদ, অন্য দিকে দু’হাত তুলে প্রশংসা আর সমর্থন। তবে অর্থনীতির পালে হাওয়া জোগাতে কোনও প্রাজ্ঞ রাজনীতিক নন, ‘অর্থনীতিবিদ’ মনমোহনকেই বেছে নিয়েছিলেন পিভি।

মনমোহন চেয়েছিলেন সেটুকুই। চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী যেন স্বাধীন ভাবে তাঁকে কাজ করার সুযোগ দেন। সেই স্বাধীনতা পেয়েছিলেন মনমোহন। কন্যার বইতে মনমোহন পিভি সম্পর্কে বলছেন, “প্রথম দিকে উনি সংশয়ী ছিলেন। পরে উনি বুঝতে পারলেন আমরা সঠিক কাজই করছি। এ ছাড়া অন্য পথ ছিল না। কিন্তু উনি বার বার বলতেন যে, আমরা যেন মধ্যপন্থা অবলম্বন করি। অর্থনৈতিক উদারীকরণের পাশাপাশি দেশের প্রান্তিক মানুষ, বিশেষত গরিবদেরও যেন যত্ন নেওয়া হয়।”

অর্থমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্বভার সামলানো মনমোহন রাজনীতির সিঁড়ি বেয়ে ২০০৪ সালে দেশের প্রধানমন্ত্রী হন। ২০১৪ সাল পর্যন্ত একটানা ১০ বছর ওই পদে ছিলেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement