অনুব্রত মণ্ডল। ফাইল ছবি।
গরু পাচার মামলায় এ বার দিল্লিতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর সদর দফতরে হাজিরা দিলেন অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ির পরিচারক তথা রাঁধুনি বিজয় রজক। শুক্রবার বেলার দিকে লাভপুর কলেজের অস্থায়ী কর্মী বিজয়কে ইডি দফতরে ঢুকতে দেখা যায়।
নিজেদের হেফাজতে অনুব্রতকে নেওয়ার পরে তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলকেও তলব করেছে ইডি। তখনই ইডি সূত্রে খবর মিলেছিল, শুধু সুকন্যা নন, গরু পাচার মামলার তদন্তে অনুব্রতের মুখোমুখি বসিয়ে তাঁর হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারি-সহ মোট ১২ জন সন্দেহভাজন এবং সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে নোটিস পাঠিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা। ইডির সূত্রেরই দাবি, ওই ১২ জনের তালিকাতেই ছিলেন বিজয়।
বোলপুর হাটতলা এলাকার বাসিন্দা বিজয়ও অনুব্রতের অত্যন্ত বিশ্বস্ত বলে পরিচিত। তৃণমূল জেলা সভাপতির বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ছবি তোলার দায়িত্ব ছিল এই বিজয়ের উপরেই। এর আগে তাঁকে নিজাম প্যালেসে তলব করেছিল সিবিআই। ইডি সূত্রের দাবি, অনুব্রতের বাড়ির পরিচারকদের অ্যাকাউন্টে নানা সময় বহু টাকার লেনদেন হয়েছে। সেই সূত্রে বিজয়ের একাধিক অ্যাকাউন্টের হদিসও মিলেছে। সেই সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই তাঁকে তলব করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ইডি সূত্রে খবর, ১২ জনের তালিকায় অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ কৃপাময় ঘোষ এবং সুকন্যার গাড়িচালক তুফান মির্ধার নামও ছিল। বোলপুরের বাসিন্দা তৃণমূলকর্মী কৃপাময়কে শক্তিগড়ে প্রাতরাশ সারার সময় অনুব্রতের সঙ্গে খেতে দেখা গিয়েছিল। তদন্তকারী সংস্থার সূত্রের দাবি, তলব করা হলেও বৃহস্পতিবার তাঁকে ইডি দফতরে হাজিরা দিতে দেখা যায়নি।
তৃণমূল সূত্রের খবর, দেহরক্ষী সহগল হোসেন এবং হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারি ছাড়া আর যে কয়েক জন অনুব্রতের ঘনিষ্ঠ বৃত্তে ছিলেন, তাঁদের অন্যতম কৃপাময়। বোলপুরের নিচু বাঁধগোড়া এলাকায় বাড়ি কৃপাময়ের। বোলপুর কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা ছিলেন তিনি। সেখান থেকেই তিনি অনুব্রতের ‘নজরে’ আসেন বলে তৃণমূল সূত্রে দাবি। পরে কৃপাময় মৎস্য দফতরে চাকরি পান। এ ছাড়াও তাঁর পৈতৃক গাড়ির ব্যবসা রয়েছে। গত কয়েক বছরে সেই ব্যবসা এবং কৃপাময়ের নিজের ‘ফুলেফেঁপে ওঠা’ নিয়েও এলাকায় চর্চা ছিল। ইডি সূত্রের দাবি, তাঁর একাধিক চার চাকা গাড়ি, দামি ফোন, বেশ কিছু জমি জায়গাও রয়েছে বলে তদন্তে জানা গিয়েছে। যে কৃপাময় এত সহজে হেফাজতে থাকা অনুব্রতের সঙ্গে পুলিশের ঘেরাটোপ ভেদ করে গিয়ে কথা বলে আসতে পারেন, তাঁর কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলতে পারে বলেই মনে করছেন ইডির তদন্তকারীরা।