ফাইল চিত্র।
উচ্চ মাধ্যমিকে অনুত্তীর্ণ এক ছাত্রীর পর এ বার স্কুলশিক্ষকদের ভুল বানান নিয়ে তোলপাড় হচ্ছে নেটমাধ্যম। পুরুলিয়ার এক হাইস্কুলের একটি আবেদনপত্রের ছবি ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ইংরেজিতে ‘স্কুল’ বানানটি ভুল লেখা রয়েছে। যদিও ওই আবেদনপত্রটি আসল কি না, তা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। একে কয়েক জন ছাত্রের দুষ্টুমি বলে বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। যদিও নেটব্যবহারকারীদের একাংশের দাবি, ‘শিক্ষকেরাই ভুল বানান লিখছেন, তবে আর ছাত্রীর দোষ কী?’
সম্প্রতি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য ছাত্রীদের বিক্ষোভে এক ছাত্রীকে ‘আমব্রেলা’ বানান ভুল বলতে শোনা গিয়েছে। যা নিয়ে নেটমাধ্যমে নানা কটূক্তি, টিটকিরি, রঙ্গতামাশা শুরু হয়েছিল। ওই ছাত্রীর মায়ের দাবি, তাতে অতিষ্ঠ হয়ে তিন বার আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছেন মেয়ে। ওই ছাত্রীর বদলে রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থার খামতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এ বার পুরুলিয়া জেলার বোরো থানা এলাকার দিঘি হাইস্কুলের শিক্ষকদের ‘স্কুল’ বানান ভুল ধরিয়ে সরব হলেন নেটমাধ্যমের অনেকে। যদিও ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত তথা নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, ‘‘এটা মুদ্রণজনিত ত্রুটি। বিষয়টি আমাদের নজরে আসার পরই আমরা সঙ্গে সঙ্গে বানান পাল্টে দিয়েছি। সেই সঙ্গে নতুন আবেদনপত্র দেওয়া হয়েছে। তবু কিছু বদমাশ ছেলেপুলে ওই পুরনো বানানের ছবি তুলে ভাইরাল করেছে।’’
গোটা ঘটনায় বাংলার শিক্ষাব্যবস্থাকে কাঠগড়ায় তুলেছে রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি। দলের জেলা সভাপতি বিবেক রাঙা বলেন, ‘‘বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাব্যবস্থা শেষ হয়ে গিয়েছে। মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের দুর্ভাগ্য চলছে, বলা যায়। আগে বাংলা বোর্ডের ছাত্র-ছাত্রীদের নম্বরকে ভাল চোখে দেখা হত। এখন আর তা হয় না।’’
প্রায় একই সুর শোনা গিয়েছে পুরুলিয়া জেলার বিশিষ্ট কবি তথা সাহিত্যিক দিলীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠে। তিনি বলেন, ‘‘বিক্ষোভকারী ছাত্রীকে আমব্রেলা বানান জিজ্ঞাসা করার বিষয়টি আমি ভাল চোখে দেখছি না। কারণ সে ইংরেজিতে দুর্বল বলেই ফেল করেছে। আর বিক্ষোভের কারণ জানতে গিয়ে বানান ধরাটা নিম্নমানের সাংবাদিকতা বলে মনে করি। লকডাউনের আগে থেকেই পাশ-ফেল প্রথা উঠে যাওয়া এবং প্রাথমিক স্তরে নিম্নমানের শিক্ষাব্যবস্থা, সব মিলিয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে যে অশনি সঙ্কেত দেখা দিয়েছে, তা বলা যায়।’’