মুকুল রায়। ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় সম্ভাব্য রদবদল এবং সেখানে বাংলা থেকে নতুন মুখ নিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা শোনা যেতেই গুঞ্জন শুরু হয়েছে রাজ্য বিজেপি মহলে। আর সেখানে বিভিন্ন সাংসদের পাশাপাশি উঠে আসছে মুকুল রায়ের নামও। মুকুল নিজে অবশ্য বলেন, ‘‘আমি কিছু শুনিনি। প্রস্তাব এলে ভেবে দেখব।’’
লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে ১৮টি আসন দখলের পরেও বাংলার বিজেপি কেন্দ্রে দু’জন প্রতিমন্ত্রীর বেশি কিছু পায়নি। তাঁদের অন্যতম আসানসোলের সাংসদ বাবুল
সুপ্রিয় নরেন্দ্র মোদীর প্রথম মন্ত্রিসভাতেও ছিলেন। এ বার নতুন মুখ রায়গঞ্জের দেবশ্রী চৌধুরী। দু’জনেই প্রতিমন্ত্রী।
এখন ২০২১-এর বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে কেন্দ্রে বঙ্গ বিজেপির প্রতিনিধিত্ব ও গুরুত্ব কিছুটা বাড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে বলে কেন্দ্রীয় সূত্রে খবর। সেখানেই যাঁদের নাম চর্চায় আসছে, মুকুল তাঁদের এক জন। দিলীপ ঘোষ বা লকেট চট্টোপাধ্যায়ের মতো কেউ প্রথম দফায় মন্ত্রী হবেন বলে দলেই কোনও কোনও মহল ধরে নিয়েছিল। তা হয়নি। বরং, সম্প্রতি দিলীপবাবুর রাজ্য সভাপতি পদের মেয়াদ আর এক দফা বেড়েছে। আর দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন লকেট। এই অবস্থায় ‘এক ব্যক্তি, এক পদ নীতি’ অনুযায়ী দলের পদাধিকারী থেকে তাঁদের মন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা এখনই খুব উজ্জ্বল বলে পর্যবেক্ষকদের অনেকেই মনে করছেন না। বরং, সাংসদদের মধ্যে মতুয়া সম্প্রদায় থেকে আসা বনগাঁর শান্তনু ঠাকুর বা ঝাড়গ্রামের উচ্চশিক্ষিত আদিবাসী মুখ কুনার হেমব্রমের নাম গুঞ্জনে এগিয়ে। মৃদু হাওয়ায় ভেসে উঠছে বালুরঘাট এবং কোচবিহারের দুই সাংসদ সুকান্ত মজুমদার এবং নিশীথ প্রামাণিকের নামও। যদি পাল্টা যুক্তিতে শোনা যাচ্ছে, উত্তরবঙ্গ থেকে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় এক জন আছেন।
আরও পড়ুন: বিধিনিষেধ উড়িয়ে ক্রমশ বেপরোয়া হচ্ছে শহর
তবে মুকুলের বিষয়টি সামনে আসা সবচেয়ে চমকপ্রদ। আপাতত মুকুল লোকসভা বা রাজ্যসভা কোথাও নেই। দলের একাংশের বক্তব্য, তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ হিসাবে মুকুল কেন্দ্রে রেলের
মতো মন্ত্রকেও স্বাধীন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। এ বার তাঁকে বেছে নেওয়া হলে হয়তো পূর্ণমন্ত্রীর মর্যাদা দেওয়া হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ছ’মাসের মধ্যে সংসদের কোনও একটি কক্ষে তাঁকে জিতিয়ে আনতে হবে। বাংলায় না হলেও অন্য কয়েকটি রাজ্যে রাজ্যসভার নির্বাচন আসন্ন। প্রয়োজনে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁকে জিতিয়ে আনতেই পারেন।
এখন মুকুল দলে জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য। তবে রাজ্য বিজেপির সমীকরণে তাঁর পাল্লা খুব ভারী নয় বলেই পর্যবেক্ষকদের অভিমত। এখন যদি তাঁকে আদৌ মন্ত্রী করা হয়, তবে রাজ্যে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তিনি কতটা গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হবেন, তারও একটা আভাস মিলবে। মন্ত্রিসভায় রদবদলের প্রশ্নে দলের রাজ্য সভাপতি ও সাংসদ দিলীপবাবুর বক্তব্য, ‘‘আমাদের কাছে এ সব নিয়ে কোনও
খবর নেই। নতুন যাঁরা রাজ্যের সাংগঠনিক পদে এসেছেন, তাঁদের কাউকে মন্ত্রী করা হলে ওই পদে আবার নতুন লোক আসবেন। আমাদের লোকের অভাব নেই। আর আমি মন্ত্রী হতে চাইলে আগেই হতে পারতাম।’’