Mamata Banerjee

সরকারি ভবনে গেরুয়া রং নিয়ে আপত্তি, মোদীর হাতে চিঠি দিয়েছেন মমতা! জানা গেল প্রায় এক মাস পরে

মোদীকে দেওয়া চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিভিন্ন ভবন এবং প্রকল্পের নাম, প্রতীক, রং নির্ধারণের চেষ্টা করেছে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রক। বিশেষত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রের।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৪ ১৭:১৯
Share:

(বাঁ দিকে) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।

বিভিন্ন সরকারি ভবনে গেরুয়া রং করা নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আগেই সরব হয়েছিল রাজ্য সরকার। এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আরও এক বার চিঠি দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ২০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই দিনই মমতা সেই চিঠি দিয়েছিলেন বলে নবান্ন সূত্রে খবর।

Advertisement

মোদীকে দেওয়া চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিভিন্ন ভবন এবং প্রকল্পের নাম, প্রতীক, রং নির্ধারণের চেষ্টা করেছে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রক। বিশেষত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্রের। কেন্দ্র শর্ত দিয়েছে, নয়তো কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অনুদান দেওয়া হবে না। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর বিরোধী। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় প্রকল্পে রাজ্যেরও অনুদান রয়েছে। তা ছাড়া এই প্রকল্পগুলি কার্যকর করতে হয় রাজ্য প্রশাসনকেই। তাই অনুদান দেওয়ার শর্ত চাপিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রকগুলি ভবন এবং প্রকল্পের নাম, প্রতীক, রং চাপিয়ে দেওয়ার যে চেষ্টা করছে, তা ‘দুর্ভাগ্যজনক’। এই বিষয়টি ‘অন্যায়’ তো বটেই, পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর বিরোধী।

নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, মমতা চিঠিতে আরও জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রকগুলি যে প্রতীক ‘চাপানোর চেষ্টা’ করছে, তার সঙ্গে ভারত সরকারের খুব একটা মিল নেই। বরং মিল রয়েছে কেন্দ্রের শাসকদলের প্রতীকের। মুখ্যমন্ত্রী চিঠিতে এ-ও জানিয়েছেন, মোদী যখন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তখন তিনি রাজ্যের অধিকার নিয়ে লড়াই করেছিলেন। ভারতের মতো ‘মহান’ দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে রাজ্যগুলির বড় ভূমিকা রয়েছে। রাজ্যকে আমল না দিয়ে কেন্দ্র একক ভাবে কোনও পদক্ষেপ করলে তা আদতে দেশকেই দুর্বল করবে।

Advertisement

গত ২০ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। — নিজস্ব চিত্র।

গত নভেম্বরে দিল্লির তরফে নবান্নকে একটি চিঠি পাঠিয়ে বলা হয়েছিল, রাজ্যে ‘জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন’ প্রকল্পের টাকায় তৈরি সুস্বাস্থ‌্য কেন্দ্রের রং নিয়মমাফিক না হওয়ায় রাজ্যের প্রাপ্য টাকা দেওয়া হবে না। নবান্ন সূত্রে জানা যায়, ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির রং গেরুয়া করতে বলেছিল কেন্দ্র। এ নিয়ে সরব হয়েছিলেন মমতা। প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও দিয়েছিলেন। বাংলার গরিব মানুষ যাতে ভাল স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত না হন, তা নিশ্চিত করার আর্জি জানিয়েছিলেন মমতা।

রং নিয়ে রাজনীতির অভিযোগ গত কয়েক কয়েক মাস ধরেই তুলেছে তৃণমূল। রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে রাস্তাঘাটের রেলিং থেকে শুরু করে সরকারি ভবন, সবই নীল-সাদা রং করায় তৃণমূল সরকার। রাজ্যের মুখ্য সচিবালয়ের রংও নীল-সাদা। পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের অর্থে বাংলায় সম্প্রতি তৈরি হয়েছে ৪৭৪টি সুস্বাস্থ‌্য কেন্দ্র। ৬৫টি ব্লক ও ২৮টি প্রাথমিক স্বাস্থ‌্যকেন্দ্র। এগুলির রংও নীল-সাদা। এখানে আপত্তি জানিয়েছিল কেন্দ্র। ‘জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন’ প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্রের দাবি, প্রকল্পের ‘ব্র্যান্ডিং’ মানেনি পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ‘ব্র্যান্ডিং’-এর মধ্যে প্রকল্পের নাম যেমন থাকে, তেমনই এই প্রকল্পে তৈরি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাড়ির রংও রয়েছে। সেটা গেরুয়া। এই প্রকল্পের ৬০ শতাংশ টাকাই দেয় কেন্দ্র। বাকি ৪০ শতাংশ রাজ্যের। এখন রাজ্য শর্ত মানেনি অভিযোগে কেন্দ্রের অর্থের অংশ ৮২৬.৭২ কোটি টাকা রাজ্যকে দেওয়া হচ্ছে না বলেই নবান্ন সূত্রে জানা যায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের রং নিয়ে তৈরি হয়েছিল দ্বন্দ্ব। গত ২০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার পাশাপাশি সে সবই তুলে ধরেছিলেন মমতা বলে খবর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement