হঠাৎ সৌরভ, জেমস বিতন্ডা

মন্ত্রী মলয় ঘটকের সামনে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়লেন দলের আলিপুরদুয়ার জেলার দুই বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী ও জেমস কুজুর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২০ ০০:৪২
Share:

প্রতীকী ছবি

তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটকের সামনে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়লেন দলের আলিপুরদুয়ার জেলার দুই বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী ও জেমস কুজুর। বুধবার দলের জেলা কার্যালয়ে পর্যবেক্ষকের সঙ্গে নেতাদের বৈঠকের সময় এই ঘটনাটি ঘটেছে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।

Advertisement

লোকসভা ভোটে হারের পরে সম্প্রতি আলিপুরদুয়ারে দলের পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব থেকে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে অব্যাহতি দিয়েছে তৃণমূল। তার বদলে জেলার পর্যবেক্ষক করা হয়েছে মলয় ঘটককে। পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব নেওয়ার পর এ দিন প্রথমবার আলিপুরদুয়ারে আসেন তিনি। দলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে জেলা কার্যালয়ে তৃণমূলের পতাকা তোলেন তিনি। তার পর নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন পর্যবেক্ষক। কিন্তু কখনও দুই বিধায়কের মধ্যে বাদানুবাদ, তো কখনও জেলা পরিষদের তহবিল না পাওয়া নিয়ে নেতারা সরব হওয়ায় বৈঠকে বেশ খানিকটা উত্তাপ ছড়ায়।

সূত্রের খবর, আলিপুরদুয়ার পুরসভার দলের প্রাক্তন কাউন্সিলরদের নিয়ে পর্যবেক্ষক প্রথমে একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। তার পর একই ভাবে জেলা পরিষদ সদস্য ও ব্লক সভাপতিদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, দ্বিতীয় বৈঠকটিতেই আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরভ ও কুমারগ্রামের বিধায়ক জেমস নিজেদের মধ্যে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন। জেমসের ঘনিষ্ঠ নেতাদের একাংশের অভিযোগ, “বৈঠকে সৌরভ আচমকাই বলে ওঠেন, জেমস রাজ্যের মন্ত্রী থাকার সময় আলিপুরদুয়ার জেলা উন্নয়নের জন্য সে ভাবে টাকা পায়নি।” এতেই খেপে যান জেমস। তিনি পাল্টা সৌরভকে বলেন, “জেলার উন্নয়নে আমি নানা পরিকল্পনা নিয়েছিলাম। কিন্তু সেই কাজ করার আগেই তো আপনারা আমায় মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দিলেন।” যদিও সৌরভ ঘনিষ্ঠ নেতাদের দাবি, জেমসের বিরুদ্ধে সৌরভ কিছু বলেননি। বরং জেমসের পক্ষেই বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু জেমস সেটা ভুল বুঝেছেন।

Advertisement

জেমসের সঙ্গে কথা কাটাকাটির কথা মানতে চাননি সৌরভ। তাঁর কথায়, “বৈঠকে আমার সঙ্গে কুমারগ্রামের বিধায়কের সমস্যা হওয়া তো দূরের কথা, তেমন কোন পরিস্থিতিই তৈরি হয়নি।” আর জেমস বলেন, “দলের আভ্যন্তরীণ বৈঠক নিয়ে সংবাদমাধ্যমকে কিছু বলব না। কিছু বলার থাকলে দলের জেলা সভাপতি বলবেন।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী বলেন, “বৈঠকে এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি।”

এখানেই শেষ নয়। তৃণমূল সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে জেলার উন্নয়নমূলক কাজের প্রসঙ্গও ওঠে। সেই সময় দলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের মেন্টর মোহন শর্মা বলেন, “নতুন বোর্ড গঠনের পরে গত দেড় বছরে জেলা পরিষদ মাত্র ১ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা পেয়েছে। সামান্য এই টাকায় উন্নয়নের কী কাজ হবে? আর উন্নয়নমূলক কাজ না হলে মানুষ কেন আমাদের ভোট দেবেন?” বন্ধ চা বাগান নিয়েও এ দিনের বৈঠকে মোহন সরব হন বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। যদিও মোহনের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে জনসংযোগ ও মানুষের সমষ্টিগত উন্নয়নে জোড় দেন মলয়। সেই সঙ্গে রাজ্য সরকারে বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা যাতে মানুষ পায়, সেই বিষয়টি তিনি নেতাদের দেখতে বলেন। তবে বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে, তা নিয়ে কোন মন্তব্য করতে চাননি তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement