নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়েছে অয়ন শীলকে। ফাইল ছবি।
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত অয়ন শীলের স্ত্রী কাকলি এবং পুত্র অভিষেক দীর্ঘ ক্ষণ জেরার পর ইডি দফতর থেকে বেরোলেন। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের মুখে পাল্টা জবাব দিতে শোনা গেল অভিষেককে। দুর্নীতির যাবতীয় অভিযোগের প্রমাণ আছে কি না, জানতে চেয়েছেন তিনি।
ইডি দফতর থেকে বেরোনোর পর অভিষেককে অয়নের ১০০ কোটির দুর্নীতি প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয়। সাংবাদিকেরা জানতে চান, ১০০ কোটি টাকার যে দুর্নীতিতে অয়নের নাম জড়িয়েছে, তা নিয়ে অভিষেক কিছু বলতে চান কি না। প্রশ্ন শুনে সাংবাদিকদের উদ্দেশে অয়ন-পুত্রের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘আপনাদের কাছে এর কোনও প্রমাণ আছে?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এ বিষয়ে বিচার চলছে। চার্জশিটও এখনও তৈরি হয়নি। কিন্তু তার আগেই নানা জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে।’’
অয়নের বাড়ি এবং অফিসে তল্লাশি চালিয়ে চাকরির পরীক্ষার প্রচুর উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট পাওয়া গিয়েছিল বলে দাবি ইডির। সে বিষয়ে প্রশ্ন শুনে অভিষেক বলেন, ‘‘যাঁরা সরকারি টেন্ডার নেন, তাঁদের কাছ থেকে স্বাভাবিক ভাবেই এমন অনেক কিছুই পাওয়া যায়। সে সব গোপনীয় নথিও হতে পারে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, সংবাদমাধ্যম আগেই তা নিয়ে নিজেদের মতো রায় দিয়ে দেবে। পুরোটাই বিচারাধীন বিষয়।’’
অয়নের সংস্থার ডিরেক্টর হিসাবে অভিষেককে দেখানো হয়েছে বলে দাবি করেছিল ইডি। সে বিষয়ে অয়ন-পুত্রের জবাব, ‘‘এটি আগে থেকে আমি জানতাম না। ২০১৩ সালে যখন কোম্পানি তৈরি হয়, আমি তখনও নাবালক।’’
অভিষেক কি ইমন গঙ্গোপাধ্যায়কে চেনেন? এই প্রশ্নের উত্তরে অয়ন-পুত্র জানান, সই করার সময় দু’বার তাঁর সঙ্গে ইমনের দেখা হয়েছিল। তবে তেমন আলাপ নেই। পুরো বিষয়টিকে ব্যবসা সংক্রান্ত বলে দাবি করেছেন অভিষেক। পাশাপাশি অয়ন প্রসঙ্গে উঠে আসা আর এক নামী মডেল অভিনেত্রী শ্বেতা চক্রবর্তীকে তিনি চেনেন না বলে দাবি করেছেন অভিষেক।
ইডি দফতরে শুক্রবার প্যান কার্ড এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের যাবতীয় নথি জমা দিয়ে এসেছেন অয়ন-পুত্র। অয়নের স্ত্রী কাকলি শুক্রবার সকাল ১০টা নাগাদ ইডি দফতরে ঢুকেছিলেন। অভিষেক গিয়েছিলেন আরও কিছুটা পরে। মা, ছেলে দু’জনেই সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার পর ইডির অফিস থেকে বেরোন।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে অয়নের বাড়ি এবং অফিসে টানা তল্লাশির পর তাঁকে গ্রেফতার করেছিলেন ইডি আধিকারিকেরা। অভিযোগ, তাঁর কাছ থেকে চাকরির পরীক্ষার একাধিক উত্তরপত্র ছাড়াও উদ্ধার করা হয় বেশ কিছু অ্যাডমিট কার্ড এবং অন্যান্য নথিও। ইডি সূত্রে দাবি, অয়নের কাছ থেকে যে সমস্ত ওএমআর শিটের প্রতিলিপি মিলেছে, সেগুলি পুরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত পরীক্ষার। অয়নের বাড়িতে ৩২টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথিও পাওয়া গিয়েছে। কাকলির পাশাপাশি অয়নের বান্ধবী শ্বেতা চক্রবর্তীর নামেও অ্যাকাউন্টের নথি পাওয়া গিয়েছে।