মানিক ভট্টাচার্যের বাড়িতে ইডির তল্লাশি। — ফাইল চিত্র।
শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা নদিয়ার পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের বাড়ি থেকে উদ্ধার হল সিডিবন্দি কয়েকশো চাকরিপ্রার্থীর নামের তালিকা। এই সূত্রেই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর হাতে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্তকারী সংস্থাটি প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছে, ওই তালিকার মধ্যে ৯০ শতাংশ চাকরিপ্রার্থীই মনোনীত হয়েছেন। তবে তা আরও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
দীর্ঘ জেরার পর, মঙ্গলবার ইডি গ্রেফতার করে মানিককে। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর যাদবপুরের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয়েছে সিডিবন্দি কয়েকশো চাকরিপ্রার্থীর নামের তালিকা। প্রাথমিক ভাবে ইডি এ-ও জানতে পেরেছে, ওই তালিকার মধ্যে ৯০ শতাংশ প্রার্থীই চাকরির জন্য মনোনীত হয়েছেন। সবিস্তার তথ্য নেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত হওয়া প্যানেলও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি, মানিকের বাড়িতে কী ভাবে এবং কেন ওই নামের তালিকা এল তার উত্তরও খুঁজছে ইডি।
মানিকের বাড়ি থেকে পাওয়া গিয়েছে ৬টি সিডি। সেই সিডিতেই চাকরিপ্রার্থীদের নামের তালিকা রয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর। সেই সঙ্গে রয়েছে প্রার্থীদের রোল নম্বরও। এ ছাড়া মানিকের বাড়ি তল্লাশি করে একাধিক নথিও বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। তার মধ্যে রয়েছে ১৪৮ পাতার একটি একটি ‘মানি রিসিট বুক’। যা ‘অ্যাকুয়ের কলসাল্টেন্সি সার্ভিসেস’ নামে একটি সংস্থার নামে। ওই সংস্থাটি মানিক-পুত্র শৌভিকের নামে। এ ছাড়াও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে একটি আইফোন-সহ দু’টি মোবাইলও।
মানিকের বিরুদ্ধে একের পর এক গুরুতর অভিযোগ তুলছে ইডি। তদন্তকারীদের দাবি, পরিবারের সদস্যদের নামে একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের পাশাপাশি অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের নামেও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন মানিক। পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়কের নামে আরও অভিযোগ, ছেলের সংস্থার নামে নিজের ‘প্রতিপত্তি’ কাজে লাগিয়ে তিনি নয়ছয় করেছেন কোটি কোটি টাকা। আদালতকে ইডি জানিয়েছে, চাকরি ‘বিক্রি’র ‘মূল মাথা’ ছিলেন মানিক। এক দশক ধরে তিনি ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের মাথায়। তাঁর আমলে রাজ্যে চাকরি হয়েছে ৫৮ হাজারেরও বেশি প্রার্থীর। তাদের মধ্যে কত জনের নিয়োগ বেআইনি? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পাশাপাশি, এর পিছনে যে বিপুল অঙ্কের আর্থিক লেনদেনও রয়েছে তা নিয়েও এক প্রকার নিশ্চিত ইডি।