মানিক ভট্টাচার্য। ফাইল চিত্র।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে প্রাথমিক শিক্ষক পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের ছেলের অ্যাকাউন্টে ২ কোটি ৬৪ লক্ষ টাকার হদিস পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। মানিকের ছেলের একটি সংস্থার অ্যাকাউন্টে ওই টাকা পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। মঙ্গলবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে হাজির করানো হয় মানিককে। সেখানেই মানিকের ছেলের অ্যাকাউন্টে কোটি টাকার হদিস পাওয়ার তথ্য আদালতে জানায় ইডি।
ইডির দাবি, মানিক-পুত্র শৌভিকের নামে একটি কনসালটেন্সি ফার্ম রয়েছে। ৫৩০টি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (যারা বি.ইডি, ডি.ইএল.ইডি-র মতো কোর্স করায়) ৫০ হাজার টাকা করে অর্থ দিয়েছে ওই সংস্থায়। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, এ ক্ষেত্রে অর্থ তছরুপ হয়েছে। যদিও মানিকের আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত দাবি করেছেন, এটা অর্থ তছরুপের বিষয় নয়। এ সংক্রান্ত তথ্য ইডিকে দেওয়া হয়েছে। আয়কর রিটার্ন দাখিলও করা হয়েছিল। ইডির হয়ে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি, ভাস্কর প্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিজিৎ ভদ্র। মানিককে ১৪ দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
শুনানি চলাকালীন আদালতে মানিককে চোদ্দো দিনের জেল হেফাজতে পাঠানোর আবেদন করেন ইডির আইনজীবী। ইডির আইনজীবী আদালতে জানান, মানিকের ব্যাঙ্কের একাধিক নথি খতিয়ে দেখতে হবে। মানিকের সম্পত্তি নিয়ে বিস্তারিত তথ্যও সংগ্রহ করতে চায় ইডি। মানিককে জেরা করে এই দুর্নীতির নেপথ্যে আরও কোনও বড় মাথা জড়িত আছে কি না, তা-ও ইডি খুঁজে বার করতে চাইছে। আর তাই মানিককে হেফাজতে রাখা দরকার বলেও ইডির আইনজীবী আদালতে যুক্তি দেন।
প্রসঙ্গত, ব্যাঙ্কশাল আদালত চত্বরে ঢোকার সময় সাধারণ জনতার রোষের মুখে পড়তে হয় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যানকে। তাঁকে ঘিরে ‘চোর, চোর’ রব ওঠে আদালত চত্বর জুড়ে। হাতে জুতোও তুলে নেয় উন্মত্ত জনতা।
সোমবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মানিককে ডেকে পাঠান ইডি আধিকারিকরা। ইডির তরফে মানিককে যে সময়ে তলব করা হয়েছিল, তার বেশ কিছু সময় পরে সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হন তিনি। এর পর রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ চলে। মানিককে রাত থেকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলেও ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে। এর পর বয়ানে অসঙ্গতি এবং জেরায় অসহযোগিতার অভিযোগে সোমবার রাতেই গ্রেফতার করা হয় পলাশিপাড়ার বিধায়ককে।