কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলকে উদ্বুদ্ধ করতে বঙ্গ বিজেপিকে ‘টোটকা’ দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। দলের অন্দরে তাঁর বক্তব্য, দক্ষ সংগঠকদের পর্যবেক্ষক হিসেবে রাজ্যে পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। রাজ্য নেতাদের দায়িত্ব এখন পঞ্চায়েতে ভাল ফল করে দেখানো।
উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রের প্রবাস কর্মসূচি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাজ্যে এসেছিলেন স্মৃতি। পাশাপাশি এ দিনই বিধাননগরের পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্রে দলের মোর্চা সম্মেলন ছিল। সেখানেও যান স্মৃতি। তবে সূত্রের খবর, মোর্চা সম্মেলনে বিশেষ কিছু বলেননি অমেঠীর সাংসদ। পরে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করেন তিনি। সেখানেই দলকে ‘উদ্বুদ্ধ’ করতে পর্যবেক্ষক ও সহ-পর্যবেক্ষকের সাংগঠনিক দক্ষতার প্রসঙ্গ তোলেন। তিনি জানান, সুনীল বনসল অতীতে উত্তরপ্রদেশের ভোটে বিজেপিকে জেতাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছেন। মঙ্গল পাণ্ডে নিজে বিহারের মন্ত্রী ছিলেন। সতীশ ধন্ড অমেঠীতে তাঁর নির্বাচনের দায়িত্বে ছিলেন। এমন পোড় খাওয়া সংগঠকেরা শুধু-শুধু পশ্চিমবঙ্গে এসে পড়ে নেই। নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহেরা চেয়েছেন বলেই তাঁরা এসেছেন। এ বার বাংলার নেতাদের দায়িত্ব, এঁদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বাংলায় ভাল ফলাফল বার করে আনা।
পশ্চিমবঙ্গের সহ-পর্যবেক্ষক আশা লকড়ার উদাহরণ দিয়ে স্মৃতি বলেন, এক সময় বিজেপি করার অপরাধে ওঁর স্বামী অতি বামপন্থীদের হাতে খুন হন। সেই থেকে আশা শপথ নিয়েছিলেন, বিজেপির ছাতার তলায় এসে বামপন্থীদের বিরুদ্ধে লড়াই করবেন। এখন তিনি রাঁচীর মেয়র। অতএব জেদ থাকলে, লড়াই করার মানসিকতা থাকলে ‘সাফল্য’ আসবেই।
সম্মেলনের শুরুতে এ দিন সুকান্ত অবশ্য চাঁছাছোলা ভাষায় দলীয় সাংসদ সৌমিত্র খাঁর আক্রমণের জবাব দেন। কোর কমিটি থেকে বাদ পড়ে রাজ্য সভাপতিকে ‘অযোগ্য’, ‘শিক্ষানবিশ’ বলে আক্রমণ করেছিলেন সৌমিত্র। সুকান্ত এ দিন নাম না করে বলেন, ‘‘কিছু লোক আছে, যাঁদের কোনও কাজ নেই। তাঁরা শুধু সংবাদমাধ্যমে কথা বলে বেঁচে আছেন। কোনও দায়িত্ব দিলে তাঁদের পাওয়া যায় না। কাজের সময় থাকেন না। খালি বড় বড় কথা! আমি সুকান্ত মজুমদার বুধবার আমার স্ত্রী ও প্রথম কন্যার জন্মদিন ছিল। আমি তখনও বর্ধমানে কর্মীদের মাঝে ছিলাম। উনি কোথায়?” তাঁর সংযোজন, “আসুন না। দায়িত্ব নিন। বলুন পঞ্চায়েতে জেতাবেন। বুঝব কত দম! শত্রুকে চিনুন। দলকে আক্রমণ না করে তৃণমূলকে আক্রমণ করুন। তবেই এই অপশাসনের অবসান সম্ভব।” বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কর্মীদের ভোটার তালিকা নিয়ে সচেতন হতে বলেছেন। তাঁর আশঙ্কা, তৃণমূল সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর ভোটার তালিকায় প্রচুর বাংলাদেশি নাগরিকের নাম ঢোকাতে পারে। দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে লড়াই চলবে। তবে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের কটাক্ষ, “অর্ধেক জায়গায় কমিটি নেই। প্রার্থী দিতে পারবে না। হার নিশ্চিত জেনে এই সব নাটক করছে।”