Myanmar Conflict

‘আত্মসমর্পণ করবেন না, জনগণের পাশে থাকুন’, মায়ানমার সেনাকে আবেদন জুন্টা প্রধানের

রাখাইন ও চিন প্রদেশ হাতছাড়া হওয়ার পরে বিদ্রোহীদের ধারাবাহিক হামলার জেরে জুন্টা সেনার গতিবিধি এখন রাজধানী নেপিডো, বাণিজ্য রাজধানী ইয়ঙ্গন-সহ কিছু শহরে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:৫৮
Share:

মায়ানমার সেনা। ছবি: রয়টার্স।

মরণপণ প্রতিরোধ নয়, গত এক মাসে রাখাইন এবং চিন প্রদেশের একের পর এক ঘাঁটি বিনা যুদ্ধে বিদ্রোহীদের হাতে তুলে দিয়েছে মায়ানমার সেনা। সেই সঙ্গে ক্রমশ বিদ্রোহীদের প্রতি সমর্থন বাড়ছে জনসাধারণের এই পরিস্থিতি উদ্বেগ বাড়ছে সামরিক জুন্টা সরকারের। ইয়ঙ্গনের হামাউবি টাউনশিপে মহিলা অফিসার ক্যাডেটদের ‘পাসিং আউট’ অনুষ্ঠানে জুন্টাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের বক্তৃতায় তা ধরে পড়েছে বলে বৃহস্পতিবার সে দেশের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী আউং সান সু চির সমর্থক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইরাওয়াদি’ জানিয়েছে।

Advertisement

প্রকাশিত খবরে জানানো হয়েছে, ওই অনুষ্ঠানে মায়ানমারের আমজনতার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য সদ্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মহিলা সেনা অফিসারদের কাছে আবেদন জানান জুন্টাপ্রধান। মায়ানমারের গত এক বছরের গৃহযুদ্ধে বিদ্রোহীদের সবচেয়ে বড় সাফল্য এসেছে চলতি মাসে। চলতি মাসের গোড়ায় বিদ্রোহী জোট ‘থ্রি ব্রাডারহুড অ্যালায়েন্স’-এর বৃহত্তম শরিক আরাকান আর্মি দখল করেছিল বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইন প্রদেশ। এর পরে রবিবার রাতে মণিপুর লাগোয়া চিন প্রদেশের দখল নিয়েছে মায়ানমারের বিদ্রোহী জোটের আর এক শরিক ! এই অংশেই মায়ানমারের কুকি জনগোষ্ঠীর (যাঁরা সে দেশে কুকি-চিন নামে পরিচিত) বসবাস। ফলে নতুন করে সীমান্ত পেরিয়ে মণিপুরে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এর পরে বুধবার আরাকান আর্মি এবং তাদের সহযোগী কারেন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি ইরাবতী নদীর অববাহিকায় অবস্থিত থান্ডওয়ে নৌঘাঁটি এবং অদূরের গাওয়া শহর দখলে নিয়েছে। গত ১৩ মাসের গৃহযুদ্ধে এই প্রথম ইরাবতী অববাহিকায় অনুপ্রবেশ করল বিদ্রোহীরা। গাওয়ার অদূরে সৈকত শহর এনগাপালিতে জুন্টা সেনার ‘ওয়েস্টার্ন কমান্ড’-এর সদর দফতরও বিনা যুদ্ধে বিদ্রোহী বাহিনীর কব্জায় চলে গিয়েছে বলে সূচি সমর্থক গণতন্ত্রপন্থীদের দাবি। গাওয়া থেকেই পথ গিয়েছে রাজধানী নেপিডো এবং বাণিজ্য রাজধানী ইয়ঙ্গনের দিকে, এর ফলে জুন্টা সরকার অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়তে চলেছে বলে সামরিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন। এই আবহে জুন্টার উপর চাপ বাড়িয়েছে সাদা পতাকা নিয়ে সেনাদের আত্মসমর্পণের বিভিন্ন ভিডিয়ো ফুটেজ।

Advertisement

বস্তুত, বিদ্রোহীদের ধারাবাহিক হামলার জেরে জুন্টা সেনার গতিবিধি এখন নেপিডো, ইয়ঙ্গন এবং আরও কিছু বড় জনপদ-শিল্পাঞ্চলেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। কিন্তু বিদ্রোহী জোট সেই এলাকাগুলি সহজে দখল করতে পারবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান সামরিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁদের যুক্তি, মায়ানমারের রাজধানী-সহ বড় জনপদগুলিতে মূলত সংখ্যাগুরু বামার জনগোষ্ঠীর বাস। তাঁদের বড় অংশ জুন্টার সমর্থক। প্রভাবশালী বৌদ্ধ ভিক্ষুরা এখনও জুন্টার পাশে রয়েছেন। অন্য দিকে, মূলত প্রান্তিক এলাকার আরাকান, কাচিন, শান, কারেনের মতো জনজাতি গোষ্ঠীগুলি রয়েছে বিদ্রোহীদের জোটে। সেই অঙ্কেই জুন্টা সরকার প্রতিরোধের ছক তৈরি করছে বলে সু চির সমর্থক স্বঘোষিত সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’ সম্প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement