Bengal Recruitment Case

এমএলএ হস্টেলের দরজা আটকে দিলেন স্কুলের চাকরিপ্রার্থীরা, বিধায়কেরা আটকে রইলেন ভিতরে

বুধবারের সকাল থেকেই কিড স্ট্রিটে এমএলএ হস্টেলের সামনে শুরু হয় ওই বিক্ষোভ। তবে বেলা ১১টা নাগাদ বিক্ষোভকারীদের জোর করেই এমএলএ হস্টেলের গেটের সামনে থেকে তুলে দিতে শুরু করে পুলিশ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২৩ ১২:০০
Share:

কিড স্ট্রিটে এমএলএ হস্টেলের সামনে বিক্ষোভে এসএলএসটির চাকরিপ্রার্থীরা। —নিজস্ব চিত্র।

পোস্টারে লেখা ‘‘চিতার আগুন লাগছে গায়ে, আর কত দিন পড়বো পায়ে?’’। আবার কারও হাতের পোস্টারে দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাই’’। এমনই সারি সারি পোস্টার এবং অজস্র দাবি দাওয়া লেখা পোস্টার হাতে নিয়ে এমএলএ হস্টেলের গেটের সামনে বসে ছিলেন স্কুলের চাকরিপ্রার্থীরা। আর বিক্ষোভের মুখে নাচার বহু মন্ত্রী এবং বিধায়ক আটকে রইলেন ভিতরে।

Advertisement

বুধবার সকালে রাজ্যের বিধানসভা অধিবেশনের যোগ দেওয়ার কথা ছিল এই মন্ত্রী-বিধায়কদের। অথচ আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের সরিয়ে এমএলএ হস্টেলের গেট দিয়ে বেরোনোর উপায়ই ছিল না। ফলে সোমবার সকাল থেকে দীর্ঘ ক্ষণ এমএলএ হস্টেলের ভিতরেই আটকে রইলেন তাঁরা। যার প্রভাব পড়ল বিধানসভাতেও।

চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, বিধানসভার অধিবেশন চলছে। সেখানে নানা বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। অথচ যে ‘যোগ্য’ চাকরিপ্রার্থীরা প্রায় ৯০০ দিন ধরে ‘প্রাপ্য’ চাকরির দাবিতে পথে বসে আন্দোলন করছেন, তাঁদের নিয়ে সরকার বা বিরোধী পক্ষের বিধায়কেরা কোনও আলোচনাই করছেন না। ভোট দিয়ে যাঁদের বিধানসভায় প্রতিনিধিত্ব করতে পাঠিয়েছেন, সেই জন প্রতিনিধিদের কাছে ‘অবিচারের’ জবাব চাইতেই তাই তাঁদের থাকার জায়গা, এমএলএ হস্টেলের গেট আটকে বিক্ষোভ দেখানোর সিদ্ধান্ত নেন রাজ্যের স্কুলের এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীরা। যদিও বেলা ১১টা নাগাদ পুলিশ সেখান থেকে তাঁদের একরকম জোর করেই সরিয়ে দেয়।

Advertisement

বড় বাস, ভ্যানে নাছোড় আন্দোলনকারীদের টেনেহিঁচড়ে তুলতে দেখা যায় পুলিশকে। অন্য দিকে আন্দোলনকারীদের চিৎকার করে বলতে শোনা যায়, প্রায় আড়াই বছর ধরে তাঁদের আন্দোলন চলাকালীন, অন্তত চারটি বিধানসভার অধিবেশন হয়েছে। কিন্তু কোনও অধিবেশনেই তাঁদের নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি।

বুধবারের সকাল থেকেই কিড স্ট্রিটে এমএলএ হস্টেলের সামনে শুরু হয় ওই বিক্ষোভ। আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভের জের পড়ে বিধানসভার অধিবেশনেও। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা যায়, ‘‘এমএলএ হস্টেলের সামনে বিক্ষোভ হচ্ছে, সেই জন্য এমএলএ, মন্ত্রীরা আটকে পড়েছেন। বলার অধিকার সবারই আছে। কিন্তু, এ ভাবে স্তব্ধ করে দিয়ে আন্দোলন করা ঠিক নয়। আমি প্রশাসনকে বলেছি বিষয়টা দেখতে।’’

এ দিকে, চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভের খবর পেয়ে বিরোধী বিজেপির বিধায়কেরাও এই ইস্যু নিয়ে সরব হন। এর আগে বিধানসভা অধিবেশনে এ নিয়ে কিছু না বললেও বুধবার কিছুটা হুঁশিয়ারির সুরেই বিধানসভায় চাকরিপ্রার্থীদের ইস্যু তুলবেন বলে জানান তাঁরা।

শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ আবার বিধায়কদের হস্টেল ঘেরাও প্রসঙ্গে নাম না করে টেনে আনেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, ‘‘এমএলএ হস্টেলের সামনে চাকরিপ্রার্থীরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ সরকারি সহায়তা মিলছে না। ইদানীং কিছু রাজনৈতিক নেতা দলের কর্মীদের বাড়ি ঘেরাওয়ের নিদান দিচ্ছেন । আজ দেখলাম, আমাদের বিধায়কদের কী অবস্থা! স্পিকারের কাছে অনুরোধ, এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের কথা শোনা হোক। আর রাজনৈতিক নেতারাও যাতে ভবিষ্যতে এমন মন্তব্য না-করেন, সেটাও দেখুন।’’

স্পিকার অবশ্য বিধায়কদের হস্টেল ঘেরাও প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমিও খুব বিব্রত বোধ করছি। কার প্ররোচনায় ওঁরা গিয়েছেন, তা আমরা জানি। এতে উৎসাহ দেওয়া ঠিক নয়। এটা যাতে ভবিষ্যতে আর না হয়, তা আমি দেখব।’’ অন্য দিকে, শঙ্করের অভিযোগ প্রসঙ্গে তৃণমূলের বিধায়ক তাপস রায় জানিয়েছেন, ‘‘তাঁদের দলের সুপ্রিমো অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শান্তিপূর্ণ অবস্থানের কথা বলেছিলেন। আর তা-ও হওয়ার কথা ছিল কেন্দ্রের কাছে বাংলার বঞ্চনার প্রেক্ষিতেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement