রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দিল্লি গিয়ে ভোট দিতে ইচ্ছুক শিশির অধিকারী।
চিকিৎসকরা অনুমতি দিলে দিল্লি গিয়েই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিতে চান কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী। আগামী ১৮ জুলাই দেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। আসানসোলের তৃণমূল সাংসদ শত্রুঘ্ন সিন্হা বাদ দিয়ে তৃণমূলের সমস্ত লোকসভা ও রাজ্যসভার সাংসদরা ভোট দেবেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায়। কিন্তু, তৃণমূল সাংসদ হলেও এখন কার্যত দল থেকে বিচ্ছিন্ন এই অশীতিপর নেতা। সূত্রের খবর, তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের কোনও নির্দেশ তাঁর কাছে যায়নি। কিন্তু রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিতে ইচ্ছুক তিনি। তাই কী ভাবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিতে যাওয়া যায়, তা নিয়ে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিচ্ছেন শিশির। তাঁদের থেকে সবুজ সঙ্কেত পেলেই দিল্লিতে গিয়ে ভোট দিতে চান তিনি। তবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কাকে ভোট দেবেন, সে বিষয়ে খোলসা করতে নারাজ কাঁথির সাংসদ।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটদান প্রসঙ্গে শিশির বলেন, "আমার নাতি এখন বড় হয়েছে। তাই ওর কাঁধে ভর দিয়ে আমি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিতে চাই।" সঙ্গে তিনি আরও বলেন, "এখন আমার বয়স ৮৪ বছর। তাই চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনেই আমাকে চলতে হয়। তাঁরা যদি আমাকে দিল্লিতে গিয়ে ভোট দিতে যাওয়ার অনুমতি দেন, তবে অবশ্যই ভোট দিতে আমি দিল্লি যাব।" রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে এমন কথা বললেও তাঁর দল তৃণমূল নিয়ে কোনও কথা বলতে নারাজ তিনি। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন তাঁর পুত্র শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্য মন্ত্রিসভা ও বিধায়ক পদ ছেড়ে তিনি বিজেপিতে যোগ দিলে অধিকারী পরিবারের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় তৃণমূল নেতৃত্বের।
গত বছর বিধানসভা নির্বাচনের সময় ১ মার্চ এগরায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের জনসভায় হাজির হয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ শিশির। তার আগে থেকেই অবশ্য তৃণমূলের সঙ্গে যাবতীয় যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল কাঁথির সাংসদের। শুভেন্দুর বিজেপিতে যোগদানের পরেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয় শিশিরকে। তৃণমূল সংসদীয় দল আবার শিশিরের সাংসদ পদ খারিজের দাবিতে স্পিকার ওম বিড়লার কাছে আবেদন জানিয়েছেন। তাই প্রায় দেড় বছরের বেশি সময় তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই কাঁথির সাংসদের। তাই রাষ্ট্রপতি ভোট নিয়ে তাঁর কাছে কোনও নির্দেশ যায়নি তৃণমূল নেতৃত্বে। তাঁর আর এক পুত্র দিব্যেন্দু অধিকারীও তমলুক থেকে তৃণমূলের প্রতীকে সংসদ সদস্য। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তিনি কী করবেন, সে প্রসঙ্গে জানতে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে, দিব্যেন্দু ফোন ধরেননি। আর শিশির-পুত্র শুভেন্দু পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বিজেপি বিধায়কদের ভোট এনডিএ-র প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুর পক্ষে আনতে উদ্যোগী হয়েছেন।