শিমুলিয়ার সেই মাদ্রাসা। শুক্রবার। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়
মাটির ঘরগুলি ভেঙে পড়েছে। নলকূপে মরচে ধরেছে, ছড়িয়ে রয়েছে বাঁশের টুকরো। খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পরে জঙ্গি-জালের খোঁজে মঙ্গলকোটের শিমুলিয়ায় যে মাদ্রাসার উপরে নজর পড়েছিল গোয়েন্দাদের, বছর পাঁচেক পরে সেটি এখন কার্যত ধ্বংসস্তূপ। বন্ধ পড়ে রয়েছে মুর্শিদাবাদের ডোমকল ও বেলডাঙার দু’টি মাদ্রাসাও।
শুক্রবার যখন এনআইএ-র বিশেষ আদালতে খাগড়াগড় মামলায় ১৯ জনের সাজা ঘোষণা হচ্ছে, সেই সময়ে শিমুলিয়ায় গিয়ে দেখা গেল, সেখানে যে মাদ্রাসাটি ছিল তা আর এখন বোঝার বিশেষ উপায় নেই। এনআইএ-র দাবি, ধানখেতের মাঝে ওই মাদ্রাসায় বেশ কিছু তরুণী জেহাদের প্রশিক্ষণ নিত। গ্রামের বাসিন্দা বোরহান শেখের জমিতে তৈরি ওই মাদ্রাসাটি চালাত পাশের কৃষ্ণবাটী গ্রামের ইউসুফ শেখ। বোরহান ও ইউসুফ, দু’জনের এখনও বিচার চলছে।
শিমুলিয়ার বাসিন্দা নুরুল হুদা বলেন, ‘‘বোরহানকে শান্ত স্বভাবের বলেই মনে হত। দোষ করে থাকলে উপযুক্ত শাস্তি হোক। শান্তিপ্রিয় এই গ্রামে এ সব কার্যকলাপ, আমরা ভাবতেই পারিনি!’’ ওই গ্রাম থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ইউসুফ ও বোরহান ২৫ কাঠা জমি কিনে আর একটি মাদ্রাসা তৈরি করছিল বলে অভিযোগ ওঠে। সেই নির্মীয়মাণ মাদ্রাসারও এখন ভগ্নদশা।
তদন্তের সূত্রে উঠে এসেছিল ডোমকলের ঘোড়ামারার একটি খারিজি মাদ্রাসার নামও। এনআইএ-র আধিকারিকেরা সেখানে গিয়ে দেখেছিলেন, তালা ঝুলছে সেটিতে। এখনও তালাবন্ধ অবস্থাতেই পড়ে রয়েছে সেটি। গোয়েন্দারা আরও জানতে পারেন, লালগোলার মুকিমনগরের একটি হাইমাদ্রাসায় রাঁধুনির কাজ করত খাগড়াগড়-কাণ্ডে অভিযুক্ত হবিবুর রহমান। সেখানে থাকত শেখ রহমতুল্লা ওরফে সাজিদও। মাদ্রাসাটি এখন পড়ে রয়েছে পরিত্যক্ত অবস্থায়। বেলডাঙার বড়ুয়া শিশু মাদ্রাসা কমিটির তৈরি একটি মার্কেট কমপ্লেক্সে দোকানঘর ছিল খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণে নিহত শাকিল গাজির। ওই শিশু মাদ্রাসা কমিটির লোকজনের সঙ্গেও কথা বলেন তদন্তকারীরা। তবে এনআইএ সূত্রে জানা যায়, শাকিলকে দোকান ভাড়া দেওয়া ছাড়া ওই মাদ্রাসার সঙ্গে খাগড়াগড়-কাণ্ডের কোনও যোগ ছিল না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হয় তারা। তাই ওই মাদ্রাসা কোনও দিন বন্ধ হয়নি।