জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র।
তিনি কে! বিধানসভার সদ্যসমাপ্ত অধিবেশনে সেই ব্যক্তির খোঁজ করছে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস। ইডি-র হেফাজতে থাকা বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় (বালু) মল্লিকের নামের পাশে সই করেছেন কে, নিরাপত্তা নিয়ে চর্চার মধ্যে বিষয়টি ভাবাচ্ছে বিধানসভার কর্তৃপক্ষকেও। একই ভাবে নবান্নের নিরাপত্তা নিয়েও সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলি নড়েচড়ে বসেছে।
গত সপ্তাহেই শেষ হয়ে যাওয়া শীতকালীন অধিবেশনে ছিলেন না জ্যোতিপ্রিয়। রেশন-দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হওয়ার পরে হেফাজতে থাকা মন্ত্রীর আসা সম্ভবও ছিল না। কিন্তু বিধানসভার তরফে সরকারি ভাবে মন্ত্রীদের হাজিরার যে নথি রাখা হয়, সেখানে দেখা যাচ্ছে মন্ত্রী উপস্থিত! তবে তা মাত্র একটি দিন, ৩০ নভেম্বর। নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে সংসদের ভিতরে দুই আগন্তুকের ঢুকে পড়ার পরে এই বিষয়টি সামনে এসেছে বিধানসভায়। হাজিরার বিষয়টি যাচাই করে এই তথ্য হাতে আসার পরে বিধানসভার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এটা হয়তো ভুল করেই কেউ করে ফেলেছেন। তবে কিছু ভুল হয়েছে বুঝে তা নথিতে চিহ্নিত করা উচিত ছিল।’’
একই ভাবে শাসক দল তৃণমূলের মন্ত্রী ও বিধায়কদের হাজিরার যে নথি রাখেন, সেখানেও এক মন্ত্রীর নামের পাশে অন্য এক জনের সই ধরা পড়েছে। জ্যোতিপ্রিয়ের পাশে কার সই, তা অবশ্য ধরা পড়েনি। মন্ত্রী হিসেবে যেখানে জ্যোতিপ্রিয়ের সই নিয়ে ‘ভুল’ হয়েছে, তা কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, মন্ত্রীদের হাজিরার জন্য এই খাতাটি একেবারে অধিবেশন কক্ষে ঢোকার মুখেই থাকে।
নিরাপত্তা নিয়ে বৃহস্পতিবারই বিধানসভার নিরাপত্তা বিভাগের কর্মীদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করেছেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তা-ই নয়, দুপুর থেকেই কলকাতা পুলিশের শীর্ষ স্থানীয় অফিসারদের সঙ্গে পুলিশের একটি বাহিনী গোটা চত্বর ঘুরে দেখেছে। বৈঠকের পরে স্পিকার বলেছেন, ‘‘বিধানসভার ভিতরে সদস্য, কর্মী ও সংবাদমাধ্যমের প্রত্যেকের পরিচয়পত্র রাখতে হবে।’’ সেই সঙ্গে কলকাতা ও রাজ্য পুলিশের যে সশস্ত্র কর্মীরা থাকেন, তাঁদের গতিবিধিও নিয়ন্ত্রণ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ব্যাপারে পুরনো কড়াকড়িই ফিরছে। সেই সঙ্গেই ওয়াকি-টকি কেনা ও রক্ষীদের শূন্য পদে নিয়োগের কথাও আলোচনা হয়েছে।
সূত্রের দাবি, নবান্নের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও এ দিন ফের এক বার খতিয়ে দেখেন কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিকেরা। মুখ্যমন্ত্রী-সহ ভিআইপি-রা নবান্নে পৌঁছনোর সময়ে নিরাপত্তার নজরদারি আরও বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টেরা নির্ধারিত সময়ের আগেও পৌঁছে যেতে পারেন নবান্নে। ফলে, পুলিশকে সতর্ক থাকতে হবে সর্বক্ষণ। যাঁরা নবান্নে বিভিন্ন কাজে গিয়ে থাকেন, নজর থাকবে তাঁদের উপরেও। পাশাপাশি, গাড়ি পার্কিংয়ের উপরেও পুলিশের নজরদারি আরও বাড়বে।