প্রশ্ন তোলা হয়েছে শ্রমজীবী ক্যান্টিনের সাফল্য নিয়েও। যাদবপুর বিধানসভার অন্তর্গত ৯৬ নম্বর ওয়ার্ডের যে বুথে শ্রমজীবী ক্যান্টিন হয়, সেই বুথেই বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএম প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী মাত্র ১১টি ভোট পেয়েছেন। এমন ফলাফল নিয়েই সমালোচক শিবির কাঠগড়ায় তুলেছেন শ্রমজীবী ক্যান্টিনকে।
দলের একাংশের সমালোচনা এড়িয়েই চলবে যাদবপুরের শ্রমজীবী ক্যান্টিন। ফাইল চিত্র।
২০২০ সালে মার্চ মাসে করোনা সংক্রমণের শুরুর দিকে দেশ জুড়ে যখন লকডাউন শুরু হয়, তখন দিন আনা দিন খাওয়া মানুষের কথা মাথায় রেখে সিপিএমের যাদবপুরের নেতা-কর্মীদের উদ্যোগে শুরু হয় শ্রমজীবী ক্যান্টিন। অল্প দিনেই এই উদ্যোগে জনমানসে সাড়া পায় স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব। তার ফলে লকডাউন পর্ব কেটে গেলেও শ্রমজীবী ক্যান্টিন চালানোর সিদ্ধান্ত নেন যাদবপুর এলাকার সিপিএমের সদস্য-সমর্থকরা। কিন্তু এ বারের কলকাতা জেলা সিপিএমের সম্মেলনে প্রশ্নের মুখে ফেলা হয় শ্রমজীবী ক্যান্টিনকে।
কলকাতা জেলা সিপিএমের দক্ষিণ কলকাতার বেশ কয়েকটি এরিয়া কমিটি এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন বলেই খবর। মূলত প্রশ্ন তোলা হয়, কী ভাবে এত দিন শ্রমজীবী ক্যান্টিন চালানো হচ্ছে? ক্যান্টিন চালানোর অর্থই বা আসছে কোথা থেকে? সঙ্গে এ কথাও ওঠে যে, সিপিএমের রাজনীতির সঙ্গে শ্রমজীবী ক্যান্টিনের কর্মসূচির কী কোনও সম্পর্ক রয়েছে? আদৌ দল কি এই ধরনের পৃথক কর্মসূচিকে মান্যতা দেয়?
প্রশ্ন তোলা হয়েছে শ্রমজীবী ক্যান্টিনের সাফল্য নিয়েও। যাদবপুর বিধানসভার অন্তর্গত ৯৬ নম্বর ওয়ার্ডের যে বুথে শ্রমজীবী ক্যান্টিন হয়, সেই বুথেই বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএম প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী মাত্র ১১টি ভোট পেয়েছেন। এমন ফলাফল নিয়েই সমালোচক শিবির কাঠগড়ায় তুলেছেন শ্রমজীবী ক্যান্টিনকে।
তবে সম্মেলনের শেষ দিন ফের একবার জেলা সম্পাদক পদের দায়িত্ব নিয়ে কল্লোল মজুমদার দাঁড়িয়েছেন শ্রমজীবী ক্যান্টিনের পাশেই। সূত্রের খবর, এই সব প্রশ্নের উত্তরে শ্রমজীবী ক্যান্টিন কী ভাবে পরিচালিত হচ্ছে, কোথা থেকে এই ক্যান্টিন চালানোর অর্থ আসছে ইত্যাদি স্পষ্ট জানিয়েছেন তিনি। সমালোচক শিবির যখন দলীয় কর্মীদের এই উদ্যোগকে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কাজ বলেছেন, তখন তার জবাবে কল্লোল এই ক্যান্টিনকে মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার এক পন্থা বলে অভিহিত করেছেন।
আর তাই নতুন উদ্যোমে শ্রমজীবী ক্যান্টিন চালু রাখা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রবিবার শ্রমজীবী ক্যান্টিন ৭০২ দিনে পদার্পণ করল। গড়ে ৬০০ মানুষ প্রতিদিন এই ক্যান্টিন থেকে খাবার পান। শ্রমজীবী ক্যান্টিনের সঙ্গে যুক্ত এক সিপিএম নেতার কথায়, ‘‘সম্মেলনে কী আলোচনা হয়েছে, তা পার্টির অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু শ্রমজীবী ক্যান্টিন চলছে, চলবে। আমাদের শ্রমজীবী ক্যান্টিন পার্টি কর্মীদের ইচ্ছেতে এবং গরিব মানুষদের প্রয়োজনের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমাদের ক্যান্টিন চালাতে অনুদান নিতে হয়। অনেকই হয়তো জানেন না, বিদেশেও আমাদের শ্রমজীবী ক্যান্টিনের ভাবনা পৌঁছে গিয়েছে। সেখান থেকেও আমাদের অর্থসাহায্য আসে। আর সব অর্থের হিসেব দলকে জানানো হয়। এই ক্যান্টিন মারফত আমরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করতে পারছি। এটা রাজনীতির জন্য খুবই জরুরি বিষয়।’’