শেখ শাহজাহান। —ফাইল চিত্র।
সন্দেশখালি মামলায় এখনই যুক্ত হতে চান না শেখ শাহজাহান। মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে এমনটাই জানালেন তাঁর আইনজীবী। সোমবার সন্দেশখালির ‘নিখোঁজ’ তৃণমূল নেতার তরফে মামলায় যুক্ত হওয়ার যে আবেদন করা হয়েছিল, তা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। মঙ্গলবার শাহজাহানের আইনজীবী অবশ্য জানিয়েছেন, আদালত মনে করলে মামলায় যুক্ত হবেন তাঁর মক্কেল।
সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহানের বিরুদ্ধেই গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে গ্রামবাসীকে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ এনেছিল ইডি। গত সোমবার সন্দেশখালির ঘটনার প্রায় ১০ দিন পর ‘খোঁজ মেলে’ সেই শাহজাহানের। ওই দিন কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। তবে সশরীরে নয়। আইনজীবী মারফত শাহজাহান হাই কোর্টকে জানান, তিনি সন্দেশখালির মামলায় যুক্ত হতে চান। কারণ, তিনি চান এই ঘটনায় তাঁর বক্তব্যও শোনা হোক।
গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে গ্রামবাসীদের হাতে আক্রান্ত হন ইডির আধিকারিকেরা। রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্তে ওই তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছিল। কিন্তু ইডির আধিকারিকেরা সন্দেশখালির সরবেরিয়া গ্রামে শাহজাহানের বাড়ির সামনে দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পরও দরজা খোলা হয়নি। যদিও ইডির তরফে দাবি করা হয় যে, তারা মোবাইল টাওয়ারের অবস্থান পরীক্ষা করে দেখে শাহজাহান তাঁর বাড়ির ভিতরেই আছেন। ইডির আধিকারিকেরা এর পর দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করতেই তাঁদের ঘিরে ধরেন হাজারখানেক গ্রামবাসী। ইট, পাথর, লাঠি নিয়ে তাঁরা চড়াও হন ইডি কর্তাদের উপর। ওই ঘটনায় জখম হন তিন ইডি কর্তা। তাঁদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালেও ভর্তি করাতে হয়। এর পরই সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে হাই কোর্টে মামলা করে ইডি।
ইডির আইনজীবী এসভি রাজু এবং ধীরাজ ত্রিবেদী সন্দেশখালির ঘটনার সিবিআই তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেন। সোমবার সেই মামলাতেই বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন শাহজাহানের আইনজীবী। তিনি বলেন, তাঁর মক্কেলও ওই মামলায় যুক্ত হতে চান। যদিও আদালত এই আবেদনে পাল্টা ভর্ৎসনা করেন শাহজাহানের আইনজীবীকেই। বিচারপতি জানতে চান, ওই ঘটনায় কত জন গ্রেফতার হয়েছেন। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত জানান, চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তের জন্য একটি ‘সুপারভিশন টিম’ বা তত্ত্বাবধান দল গঠন করা হয়েছে। তদন্তে নজরদারির জন্য ওই দলে রয়েছেন এসডিপিও, ডিএসপি এবং সার্কুলার ইন্সপেক্টর। ইডি আধিকারিকদের উপর হামলা চালানোর পরেই রাজ্য পুলিশ কেন শাহজাহানের বাড়ি ঢোকার চেষ্টা করেনি, সেই প্রশ্নও তোলেন বিচারপতি।
সওয়াল-জবাব পর্বের মাঝেই শাহজাহানের আইনজীবীর কাছে বিচারপতি জানতে চান, কেন তাঁর মক্কেল আত্মসমর্পণ করেননি? উত্তরে শাহজাহানের আইনজীবী বলেন, “আমার অধিকার ক্ষুণ্ণ হয়েছে। ইডির অভিযান সঠিক ছিল না।” বিচারপতি বলেন, “তবুও আপনার ইডির সঙ্গে সহযোগিতা করা উচিত।”