মলদ্বীপ বিমানবন্দর। ছবি: সংগৃহীত।
মলদ্বীপের তিন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ভারত এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করার অভিযোগ ওঠার পরেই সে দেশে যাওয়ার সমস্ত বিমানের টিকিট বাতিল করে দিয়েছিল ভারতের একটি জনপ্রিয় ভ্রমণ সংস্থা। বেসরকারি সংস্থা হয়েও কেন তারা দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মধ্যে নাক গলাচ্ছে, তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। সংস্থাটির কার্যকলাপ মলদ্বীপের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে কেন্দ্রকে প্ররোচিত করছে কি না, সেই প্রশ্নও ওঠে। বিতর্কের আবহে এ বার মুখ খুললেন সংস্থাটির সিইও তথা সহ-প্রতিষ্ঠাতা নিশান্ত পিত্তি।
ওই অনলাইন ভ্রমণ সংস্থা ‘ইজ়ি মাই ট্রিপ’-এর তরফে সিইও তাঁর এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি দাবি করেন যে, তাঁদের সিদ্ধান্তে কোনও ভুল নেই। ভারত-বিরোধী অবস্থান নিলে অন্য দেশে যাওয়ার বিমানের টিকিটও তারা বাতিল করবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। সংস্থার সিইও সমাজমাধ্যমের পোস্টে লেখেন, “নভেম্বর মাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিততে ভারত বিরোধী প্রচার করেছিলেন মহম্মদ মুইজ্জু। তিনি চান ভারতীয়েরা তাঁর দেশ থেকে বেরিয়ে যাক।” তার পরই মলদ্বীপ সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে তিনি বলেন, “মলদ্বীপের নতুন সরকার চিনপন্থী। তারা চায় ভারতের বদলে চিনের পর্যটকদের কাছ থেকে অর্থ উপার্জন করতে।” যে সব মানুষ, মলদ্বীপের বিমান বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন, তাঁরা বিষয়টি রাজনৈতিক চোখ দিয়ে দেখছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
বিতর্কের মধ্যেও ভ্রমণ সংস্থাটির দাবি, গত এক সপ্তাহে দেশে তাদের অ্যাপ ডাউনলোড করার পরিমাণ ২৮০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতের ৯৫ শতাংশ মানুষই এই সিদ্ধান্তে তাদের পাশে আছেন বলেও দাবি করেছে সংস্থাটি।
ভারত এবং প্রধানমন্ত্রী মোদী সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করার অভিযুক্ত তিন মন্ত্রীকই সাসপেন্ড করেছে মলদ্বীপ সরকার। তার পরেও অবশ্য দুই দেশের সম্পর্ক খুব একটা সহজ হয়নি। সমাজমাধ্যমে ভারতীয় নেটাগরিকদের ‘বয়কট মলদ্বীপ’-এর ঠেলা সামলাতে হিমশিম খেতে হয় ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিম ভারত মহাসাগরের এই দ্বীপরাষ্ট্রকে। আগে থেকে মলদ্বীপে ঘুরতে যাওয়ার বিমান-হোটেলে টিকিট বুক করে রাখার পরেও তা বাতিল করেন একের পর এক ভারতীয়। এই প্রবণতা এখনও বন্ধ হয়নি। তার মধ্যেই ভারতকে সে দেশ থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার ‘আর্জি’ জানিয়েছে মলদ্বীপ। মলদ্বীপের রাজনীতিতে ‘চিনপন্থী’ বলে পরিচিত মুইজ্জুর এই সিদ্ধান্তে চিনের হাত দেখতে পাচ্ছেন অনেকেই।