শত্রুঘ্নের উদ্দেশে ভেসে আসা কটাক্ষ থামেনি। সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরীর দাবি, “উনি (শত্রুঘ্ন) যা-ই বলুন, সংসদীয় রাজনীতির ইতিহাসটা বদলাতে পারবেন না।
লাউদোহায় তৃণমূলের কর্মী সম্মেলন। নিজস্ব চিত্র
তাঁকে যে প্রার্থী করছে দল, তা না কি প্রথমে তিনি জানতেনই না— বুধবার এমনটাই দাবি করলেন আসানসোলের তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিন্হা। সে সঙ্গে বিরোধীদের তোলা ‘বহিরাগত’ অভিযোগের জবাব দেন। স্পষ্ট করেন তাঁর রাজনৈতিক অবস্থানের বিষয়টিও।
দুর্গাপুর-ফরিদপুরের লাউদোহায় কর্মী সম্মেলনে এ দিন যোগ দেন শত্রুঘ্ন। সেখানে তিনি আসানসোলে প্রার্থী কী ভাবে হয়েছেন, সে কথা জানান। বলেন, “আমাকে যে তৃণমূল প্রার্থী করেছে, তা জানতাম না। তৃণমূল নেতা যশবন্ত সিন্হার কাছ থেকে জানতে পারি। পরে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোন করে প্রার্থী হওয়ার কথা জানান। এই মুহূর্তে পুরো দেশে একমাত্র লড়াকু নেত্রী মমতা। ফলে, তাঁর ক্ষমতা বাড়ানোর জন্যই আমি লড়ছি।”
ঘটনাচক্রে, শত্রুঘ্নকে প্রার্থী করার পরেই সিপিএম তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েই প্রশ্ন তোলে। শত্রুঘ্ন দীর্ঘদিন বিজেপির নেতা ছিলেন, ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও। পরে, কয়েক বছর কংগ্রেসে থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন সম্প্রতি। এ দিন সে বিষয়ে সরাসরি কিছু না বললেও, শত্রুঘ্ন নিজের বিজেপি ছাড়ার কারণ ব্যাখ্যা করেন। বলেন, “নোটবন্দি-সহ বিভিন্ন কারণে দলের সঙ্গে আমার মতবিরোধ হচ্ছিল। আর এখন বিজেপি অটলবিহারী বাজপেয়ীর দল নয়। এটা এক-দু’জনের দল। মানুষকে বিপদে ফেলছে। তাই, সরে এসেছি।”
পাশাপাশি, গোড়া থেকেই শত্রুঘ্নকে ‘বহিরাগত’ বলে কটাক্ষ করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। এ দিন শত্রুঘ্ন বাংলায় বক্তৃতা শুরু করে বলেন, “অনেক বাংলা সিনেমা করেছি। বাংলার খাবার ভীষণ পছন্দ করি। বাংলার হয়ে কিছু করতে চাই। বাংলাকে খুব ভালবাসি।” এ দিন ওই কর্মী সম্মেলনে শত্রুঘ্নর সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক, সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী-সহ অন্যেরা।
যদিও, শত্রুঘ্নের উদ্দেশে ভেসে আসা কটাক্ষ থামেনি। সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরীর দাবি, “উনি (শত্রুঘ্ন) যা-ই বলুন, সংসদীয় রাজনীতির ইতিহাসটা বদলাতে পারবেন না। সে ইতিহাসে লেখা আছে, উনি সুবিধাবাদী রাজনীতি করেন।” বিজেপির জেলা সভাপতি দিলীপ দে’র প্রতিক্রিয়া, “বিজেপি আসলে ওঁকে একটা সময় বিশ্বাস করেছিল। কিন্তু উনি সে বিশ্বাসের মর্যাদা রাখতে পারেননি। আর দেশের নানা প্রান্ত থেকে আমাদের নেতারা এলে, তৃণমূল তাঁদের বহিরাগত বলেছিল। সে সূত্রেই উনি বহিরাগতই থাকবেন
ভোটারদের কাছে।”