Kanika Banerjee

Lata Mangeshkar Death: দেশিকোত্তম লতা নেই, শোক শান্তিনিকেতনেও

মৃত্যুর ঠিক ২৫ বছর আগে এই দিনেই বিশ্বভারতীর সর্বোচ্চ সম্মান দেশিকোত্তম তুলে দেওয়া হয়েছিল লতা মঙ্গেশকরের হাতে।

Advertisement

সৌরভ চক্রবর্তী

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৭:৩৬
Share:

শান্তিনিকেতনে কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। ফাইল চিত্র

রবীন্দ্র সঙ্গীতকে সরস্বতীর আসনে বসাতেন, ইচ্ছে ছিল কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচালনায় একটি রবীন্দ্র সঙ্গীতের অ্যালবাম প্রকাশ করার। কিন্তু কণিকা তো আগেই চলে গিয়েছেন, আর রবিবার না ফেরার দেশে চলে গেলেন কিংবদন্তি শিল্পী লতা মঙ্গেশকরও।

Advertisement

আত্মীয় বিয়োগের শোক বুকে নিয়ে স্মৃতিচারণায় ডুব দিয়েছে শান্তিনিকেতন, যথাযোগ্য সম্মান প্রদর্শন করে রবিবার সন্ধ্যায় শ্রীনিকেতনের বার্ষিক উৎসব উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হতে চলা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বভারতীও। লতা মঙ্গেশকরের স্মৃতিতে আগামী বুধবার সকালে বিশ্বভারতীর কাচ মন্দিরে বিশেষ উপাসনারও আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।

শান্তিনিকেতনে এক বারই এসেছিলেন লতা, সেটাও এই ৬ ফেব্রুয়ারির দিনেই। মৃত্যুর ঠিক ২৫ বছর আগে এই দিনেই বিশ্বভারতীর সর্বোচ্চ সম্মান দেশিকোত্তম তুলে দেওয়া হয়েছিল লতা মঙ্গেশকরের হাতে। সে সময় বিশ্বভারতীর উপাচার্য ছিলেন দিলীপ সিংহ। সে দিন কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে মঞ্চে উঠেছিলেন এই প্রবাদপ্রতিম শিল্পী। পুরো দৃশ্যটা যেন আজও চোখের সামনে দেখতে পান প্রবীণ আশ্রমিক স্বপন ঘোষ, অপর্ণা দাস মহাপাত্রেরা। স্বপনবাবু বলেন, “এক জন অত বড় মাপের শিল্পী ঠিক কতটা মাটির কাছাকাছি হতে পারেন, সে দিনই তা উপলব্ধি হয়েছিল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতি ও তাঁর সৃষ্টির প্রতি যে নির্ভেজাল শ্রদ্ধা তাঁর অন্তরে ছিল, তা সে দিন স্পষ্টই উপলব্ধি করা গিয়েছিল।” ওই দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অপর্ণাদেবীও। তিনি বলেন, “ছোটবেলা থেকেই যাঁর গান শুনে মুগ্ধ হয়েছি, তাঁকে ওই অনুষ্ঠানে সামনে থেকে দেখেছিলাম। লতা মঙ্গেশকরকে সম্মানিত করতে পেরে আমরাও সম্মানিত হয়েছি।”

Advertisement

১৯৯৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি আম্রকুঞ্জে বার্ষিক সমাবর্তন অনুষ্ঠানে দেশিকোত্তম দেওয়া হয় লতা মঙ্গেশকরকে। ওই বছরেই দেশিকোত্তমে ভূষিত হন কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীরদ সি চৌধুরী, সুখময় ভট্টাচার্য, এলিজাবেথ ব্রুনার এবং ই সি জি সুদর্শন। কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারের সদস্য প্রিয়ম মুখোপাধ্যায় জানান, লতা মঙ্গেশকরের এতটাই শ্রদ্ধা ও আন্তরিকতার সম্পর্ক ছিল কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি, যে এক বার উত্তরবঙ্গ যাওয়ার পথে তিনি শান্তিনিকেতনে কয়েকটা দিন থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তবে সে যাত্রায় আসা না হলেও দেশিকোত্তম প্রাপ্তির আগের দিন বোলপুরের বেসরকারি হোটেলে উঠেছিলেন লতা মঙ্গেশকর। শান্তিনিকেতনে স্বাগত জানিয়ে সেখানে ফুলের তোড়া
পাঠিয়েছিলেন কণিকা। সেই তোড়া নিয়ে গিয়েছিলেন প্রিয়মবাবু এবং গোরা সর্বাধিকারী।

আর সেই সন্ধ্যাতেই শান্তিনিকেতনের অ্যান্ড্রুজ পল্লিতে কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি ‘আনন্দধারা’য় এসে উপস্থিত হন লতা মঙ্গেশকর। প্রিয়মবাবু বলেন, “বেশ কিছু ক্ষণ মৃদু কণ্ঠে আলাপ-আলোচনা হল দুই প্রবাদপ্রতিম শিল্পীর। একত্রে অ্যালবাম প্রকাশেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। আর পরের দিন দেশিকোত্তমের মঞ্চে পুরস্কার গ্রহণের আগেই সকলের কাছে অনুমতি নিয়ে
গাইলেন সরস্বতী বন্দনা। আমরা ধন্য যে, এই ‘আনন্দধারা’য় তাঁর পায়ের ধুলো পড়েছিল।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement