(বাঁ দিকে) রেশন ‘দুর্নীতি’তে ধৃত জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
গ্রেফতারির পর থেকেই বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য ওরফে ডাকু রেশন ‘দুর্নীতি’তে ধৃত মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে সম্পর্ক অস্বীকার করে আসছেন। সোমবার সিজিও কমপ্লেক্স থেকে তাঁকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়ার সময়েও একই কথা বললেন শঙ্কর। জ্যোতিপ্রিয়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক যে ভাল নয়, তা বোঝানোর জন্য অন্য যুক্তিও দিলেন। তবে ধৃত মন্ত্রীর ফোন ঘেঁটে যে তথ্য ইডি পেয়েছে, তার সঙ্গে ডাকুর দাবি মিলছে না। ফলে জ্যোতিপ্রিয়ের ফোনের তথ্য এবং শঙ্করের বয়ান ঘিরে নতুন জটিলতা তৈরি হয়েছে।
সোমবার সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্স থেকে শঙ্করকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য জোকা ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গাড়িতে ওঠার পথে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শঙ্কর জানান, তিনি জ্যোতিপ্রিয়ের কন্যাকে চেনেন না। জ্যোতিপ্রিয়ের কন্যাও তাঁকে চেনেন না। পুরসভা ভোটে টিকিট পাওয়ার প্রসঙ্গও তোলেন ডাকু। তাঁর কথায়, ‘‘যদি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে এত ভাল সম্পর্ক আমার থাকবে, আমাকে টিকিট দিল না কেন পুরসভা ভোটে? কোনও দিন ১০০ টাকাও উনি আমাকে দেননি।’’
এর আগে ডাকুকে গ্রেফতারির পর যখন আদালতে হাজির করানো হয়েছিল, তখনও মল্লিক পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ অস্বীকার করেছিলেন তিনি। জ্যোতিপ্রিয় এবং তাঁর কন্যা প্রিয়দর্শিনী মল্লিকের প্রসঙ্গে শঙ্কর বলেছিলেন, ‘‘আপনারা যাঁর কথা বলছেন, আমি তাঁকে কখনও দেখিওনি।’’
ইডি সূত্রে খবর, জ্যোতিপ্রিয়ের ফোন ঘেঁটে ডাকুর সঙ্গে ঘন ঘন যোগাযোগের কথা জানা গিয়েছে। ধৃত মন্ত্রী কাকে ফোন করেছিলেন, তাঁর কাছে কার কার ফোন এসেছিল, সে সব তথ্য এসেছে তদন্তকারী আধিকারিকদের হাতে। সেখানেই দেখা গিয়েছে, শঙ্করের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ ছিল জ্যোতিপ্রিয়ের। যা দু’জনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ইঙ্গিত দেয়।
ইডি আদালতে জানিয়েছিল, একাধিক ফরেক্স সংস্থা বা বিদেশি মুদ্রা কেনাবেচার সংস্থার মাধ্যমে ২০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে লেনদেন করেছেন শঙ্কর। ওই টাকা প্রথমে বিদেশি মুদ্রায় (মূলত ডলার) পরিবর্তন করে তার পর পাঠানো হয়েছে দুবাইতে। তার মধ্যে অন্তত ৯ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা জ্যোতিপ্রিয়ের বলে দাবি করে ইডি। তাদের আরও দাবি, হাসপাতালে জ্যোতিপ্রিয়ের সঙ্গে ডাকু চিঠির মাধ্যমে যোগাযোগ রেখেছিলেন। ধৃত মন্ত্রী তাঁর কন্যাকে একটি চিঠি দেন, যা ইডির হাতে এসেছে। ওই চিঠিতে ডাকুর নাম রয়েছে বলে খবর। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, চিঠিতে কোথায়, কার কাছে, কত টাকা রাখা আছে, তা কন্যাকে জানিয়েছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। এই চিঠির কথাও শঙ্করকে জিজ্ঞাসা করা হয়। কিন্তু তিনি সব যোগাযোগ অস্বীকার করেছেন।