(বাঁ দিকে) বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
রেশন ‘দুর্নীতি’কাণ্ডে ধৃত বনগাঁর প্রাক্তন পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যের ব্যবসা রয়েছে দুবাইতেও। তেমনটাই জানা গিয়েছে ইডি সূত্রে। ওই ব্যবসার সঙ্গে শুধু শঙ্কর নন, তাঁর পরিবারের সদস্যেরাও যুক্ত রয়েছেন। শঙ্করের পুত্র শুভ আঢ্য দুবাইয়ের ব্যবসায় সক্রিয় বলে জানতে পেরেছে ইডি।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, দুবাইয়ে শঙ্করদের একটি সংস্থা আছে। তবে সেই সংস্থা কী কাজ করে, কী ধরনের ব্যবসা রয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সেই সংক্রান্ত খোঁজখবর নিচ্ছে ইডি। সংস্থাটির লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে। এখন ওই সংস্থা নিষ্ক্রিয়।
শঙ্করকে গ্রেফতারির পর আদালতে ইডি জানিয়েছিল, ৯০টির বেশি ফরেক্স বা বিদেশি মুদ্রা লেনদেনের সংস্থা রয়েছে শঙ্কর এবং তাঁর পরিবারের। ওই সংস্থাগুলির মাধ্যমে ২০ হাজার কোটি টাকা তিনি বিদেশে লেনদেন করেছেন। রেশন ‘দুর্নীতি’র সঙ্গে ওই টাকার সম্পর্ক থাকতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছে ইডি। সে বিষয়ে তথ্যপ্রমাণ জোগাড়ের কাজ চলছে। ইডি আরও জানিয়েছে, ওই ২০ হাজার কোটির মধ্যে অন্তত ৯ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা রেশনকাণ্ডে ধৃত জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। জেরার মুখে তিনি তা স্বীকার করেছেন বলেও দাবি ইডির।
ইডি জানতে পেরেছে, দুবাইয়ে জ্যোতিপ্রিয়ের অন্তত দু’হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। ওই পরিমাণ টাকা জ্যোতিপ্রিয় কখনও সরাসরি, কখনও বা কোনও বাহকের মাধ্যমে দুবাইতে পাঠিয়েছেন। শঙ্করের সংস্থার সঙ্গে ওই টাকার যোগ আছে কি না, তা দেখা হচ্ছে। এই বিষয়ে আরও তথ্য জোগাড় করছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। প্রয়োজনে দুবাইয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তথ্য সংগ্রহের পরিকল্পনা রয়েছে ইডির।
গত ৫ জানুয়ারি রেশন মামলার তদন্তের সূত্রে বনগাঁয় শঙ্করের বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। প্রায় ১৭ ঘণ্টা তল্লাশির পর শঙ্করকে গ্রেফতার করা হয়। সে সময় বনগাঁয় স্থানীয়দের বিক্ষোভের মুখেও পড়তে হয়েছিল ইডিকে। পরে তারা আদালতে জানায়, ধৃত জ্যোতিপ্রিয়ের কাছ থেকে একটি চিঠি তাদের হাতে এসেছে। তাতে শঙ্করের নাম ছিল। টাকার লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য ওই চিঠিতে লেখা ছিল বলে জানিয়েছে ইডি।