বিধান ভবনেপ্রদীপ ভট্টাচার্য ও সোমেন মিত্র।—নিজস্ব চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, গত পাঁচ বছরে কোনও স্তরেই জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে আলোচনা হয়নি। অথচ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করেছিলেন, দেশের প্রতি ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে এনআরসি হবে! সংসদ এবং দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার দায়ে শাহের ইস্তফার দাবি তুললেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। তাঁর প্রশ্ন, নিজে পদত্যাগ না করলে শাহকে কেন ইমপিচ করা হবে না?
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, এনআরসি এবং জাতীয় জনসংখ্যাপঞ্জির (এনপিআর) বিরোধিতায় এবং মোদী-শাহের ‘বিভ্রান্তি’ ছড়িয়ে প্রতিবাদে সাম্প্রদায়িক রং লাগানোর প্রতিবাদে আজ, শুক্রবার কলকাতায় ১৭ বাম দলের সঙ্গে যৌথ মিছিল করবে কংগ্রেস। কলকাতায় এটাই প্রথম বাম ও কংগ্রেসের একত্রে প্রকাশ্য কর্মসূচি। তার আগে বৃহস্পতিবার বিধান ভবনে সোমেনবাবু বলেন, ‘‘দু’জনেই সংবিধানের নামে শপথ নিয়েছেন। তবু প্রধানমন্ত্রীকেই বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর কথা ঠিক হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদকে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করেছেন। তিনি ইস্তফা দিন অথবা তাঁকে ইমপিচ করা হোক।’’ একই সঙ্গে পুরনো এনপিআরের থেকে এ বারের ফর্ম-এর তফাত দেখিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান প্রদীপ ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘‘এই রন্ধ্রপথেই বিজেপি এনআরসি-র দুরভিসন্ধি নিয়ে ঢুকতে চাইছে! সকলকে সতর্ক হতে হবে।’’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি-র প্রতিবাদে সব দলকে শামিল হতে আহ্বান জানিয়েছেন। এই নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সোমেনবাবু এ দিন বলেন, ‘‘রাস্তায় দাঁড়িয়ে উনি অনেক কথা বলছেন। সনিয়া গাঁধীকে চিঠি দিচ্ছেন। অথচ সর্বদল বৈঠক চেয়ে প্রদেশ কংগ্রেস চিঠি দিলে তার প্রাপ্তিস্বীকারও করেননি। আবার মোদী সরকারের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে কংগ্রেস ও বামেরা মিলে ৮ জানুয়ারি যে সাধারণ ধর্মঘট ডেকেছে, তার বিরোধিতা করছেন। ওঁর কথা কি বিশ্বাসযোগ্য?’’
সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে আজ জুম্মার নমাজের পরে শুরু করে বাম ও কংগ্রেসের মিছিল এস এন ব্যানার্জি রোড হয়ে ধর্মতলা ঘুরে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ ধরে মহাজাতি সদন পর্যন্ত যাবে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের কথায়, ‘‘একই দাবিতে একটাই মিছিল হবে। এ ছাড়াও অভিন্ন দাবিতে অন্য কোনও সংগঠন বা ব্যক্তি মিছিলে যোগ দিতে চাইলে তাঁরাও স্বাগত।’’ দলীয় পতাকা নিয়েই মিছিলে আজ যোগ দেবে কংগ্রেস ও বিভিন্ন বাম দল। ঢাকুরিয়ায় এ দিন দলের প্রতিষ্ঠা দিবসের সভা থেকেও প্রতিবাদ জোরালো করার ডাক দিয়েছে সিপিআই।