Metro Rail

নয়া বন্দে ভারত গড়বে মেট্রোর কোচ নির্মাতারা

রেল সূত্রের খবর, ওই ট্রেন ঘণ্টায় সর্বাধিক ১৮০ কিলোমিটার গতিতে ছুটতে পারে।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম 

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:১৭
Share:

—ফাইল চিত্র

দরপত্র-বিতর্কে দীর্ঘ ২২ মাস থমকে আছে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনের উৎপাদন। অবশেষে কলকাতা মেট্রোর কোচ নির্মাতা দুই সংস্থার হাত ধরেই দেশীয় প্রযুক্তিতে ওই সেমি হাইস্পিড ট্রেন তৈরির কাজ শুরু হতে চলেছে। রেল সূত্রের খবর, ওই ট্রেন ঘণ্টায় সর্বাধিক ১৮০ কিলোমিটার গতিতে ছুটতে পারে। তার কামরায় স্বয়ংক্রিয় দরজা, ভেস্টিবিউলে সেন্সর নিয়ন্ত্রিত কাচের স্লাইডিং দরজা এবং বিমানের ধাঁচে ভ্যাকুয়াম টয়লেট আছে।

Advertisement

দমদম-নোয়াপাড়া মেট্রোয় সম্প্রতি নীল এবং ছাই রঙের যে-সব নতুন রেক ছুটছে, সেগুলি চেন্নাইয়ে কেন্দ্রের অধীন ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি এবং হায়দরাবাদের বেসরকারি সংস্থা মেধা সার্ভো ড্রাইভের মিলিত প্রয়াসে তৈরি। মেট্রোর রেকের মোটর-সহ নিয়ন্ত্রণ সরঞ্জাম (যা একত্রে প্রপালশন নামে পরিচিত) তৈরি করেছে মেধা। আর ট্রেনের কোচ, দরজা, বাতানুকূল ব্যবস্থা ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরির অবদান।
প্রায় একই ধাঁচে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে তৈরি হবে নতুন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস।

বেশ কয়েক বার টেন্ডার বা দরপত্র প্রক্রিয়া বাতিল হওয়ার পরে পরীক্ষামূলক ভাবে প্রথম ট্রেন তৈরির বরাত পেয়েছে মেধা। সেই কাজ হবে ৪৪টি নতুন বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের প্রপালশন, কোচের নকশা এবং প্রোটোটাইপ রেকের উৎপাদন শুরুর আগেই। উন্নততর ট্রেন তৈরির স্বার্থে নতুন ট্রেনের কোচের নকশাতেও বেশ কিছু বদলের সুপারিশ করেছে রেলের গবেষণা সংস্থা রিসার্চ, ডিজাইন অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অর্গানাইজেশন বা আরডিএসও। রেলকর্তারা জানান, ওই সুপারিশ মেনেই ট্রেনের কোচের নতুন নকশা তৈরি করবে মেধা।

Advertisement

এর আগে পদ্ধতিগত ত্রুটির অভিযোগে দু’বার ওই ট্রেনের যন্ত্রাংশ সরবরাহকারী সংস্থা নির্বাচনের দরপত্র বাতিল হয়। ভারত-চিন সীমান্তে সংঘর্ষের জেরে দরপত্রের পরেও চিনা সংস্থাগুলিকে ওই প্রক্রিয়ার বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত পর্বে ঠাঁই পায় তিনটি সংস্থা। তার মধ্যে একটি সংস্থায় চিনা অংশীদারি থাকায় তাদেরও বাদ দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত ৪৪টি ট্রেনের প্রপালশন তৈরির বরাত মেধাকেই দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল।

নকশায় প্রয়োজনীয় বদল এবং প্রোটোটাইপ তৈরি করার পরে ওই ট্রেনের পরীক্ষা হবে। প্রথম তৈরি ট্রেন গতি এবং ‘অসিলেশন’ (গতি এবং দুলুনির) পরীক্ষায় পাশ
করলে শুরু হবে তার বাণিজ্যিক উৎপাদন। মেধার তৈরি প্রপালশন ব্যবহার করে প্রথম ২৪টি ট্রেন তৈরি হবে চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরিতে। পরে রায়বরেলীর মডার্ন কোচ ফ্যাক্টরিতে ১০টি এবং কপূরথালার রেল কোচ ফ্যাক্টরিতে ১০টি ট্রেন তৈরি হবে। তবে শেষোক্ত দু’টি কারখানার ট্রেন তৈরির পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই বলে জানান রেলকর্তারা। সেই জন্য ওই দুই ক্ষেত্রে উৎপাদন শুরু হতে কত সময় লাগবে, সেটা এখনও নিশ্চিত নয়।

এর আগে দু’টি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন তৈরিতে প্রতিটির জন্য খরচ পড়েছিল গড়ে ১০০ কোটি টাকা। ‘‘দরপত্র প্রক্রিয়ায় অনেকটা সময় চলে গেলেও এই কাজের অভিজ্ঞতা আছে, এমন দু’টি সংস্থাই প্রথমে ট্রেন তৈরির কাজ শুরু করছে। আশা করা হচ্ছে, নতুন ট্রেন উন্নততর হবে,’’ বলেন এক রেলকর্তা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement