শিক্ষকদের প্রশিক্ষণে পেশাদারিত্বের ছোঁয়া। ছবি: সংগৃহীত।
মাইক্রোসফ্ট ইন্ডিয়ার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এ বার স্কুল শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেবে স্কুল শিক্ষা দফতর। সম্প্রতি স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের জেলা শিক্ষা আধিকারিকদের উদ্দেশে। তাঁদের মারফত সর্ব স্তরের স্কুলগুলির কাছে এই বিষয়ে নির্দেশিকা পৌঁছে যাবে।
নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, ‘প্রোফেশনাল ডেভেলপমেন্ট অফ স্কুল টিচার্স এমআইই এক্সপার্ট এডুকেটর প্রোগ্রাম অ্যান্ড হাইব্রিড লার্নিং ৩.০ ট্রেনিং প্রোগ্রাম’ শীর্ষক কর্মসূচিতে দু’দিন ব্যাপী অনলাইন প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যেখানে অংশ নিতে হবে রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে কর্মরত এক লক্ষ শিক্ষককে। শিক্ষকদের পাশাপাশি, স্কুলের প্রধানশিক্ষকদেরও এই প্রশিক্ষণে অংশ নিতে হবে।
সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে এই প্রশিক্ষণ পর্ব। ৩০-৩১ অক্টোবর আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, দার্জিলিং, শিলিগুড়ি, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদ, মালদহ, নদিয়া, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভুম ও ঝাড়গ্রামের স্কুলগুলিতে প্রশিক্ষণ চলবে। ১২ নভেম্বর পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং কলকাতায় এই প্রশিক্ষণ হবে। এই দিনগুলিতে কেবলমাত্র স্কুলশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
প্রধানশিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৩-৪ নভেম্বর আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, দার্জিলিং, শিলিগুড়ি, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, হাওড়া এবং হুগলি জেলার স্কুলগুলির প্রধানশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ৬-৭ নভেম্বর মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভুম ও ঝাড়গ্রামের স্কুলের প্রধানশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ৮-৯ নভেম্বর পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও কলকাতার স্কুলগুলির প্রধানশিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা হয়েছে।
সব ক্ষেত্রেই প্রশিক্ষণ নিতে গেলে স্কুলের শিক্ষক ও প্রধানশিক্ষকদের অনলাইনে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করাতে হবে। নির্দেশিকাতেই আবেদনের লিঙ্ক দেওয়া হয়েছে। অংশগ্রহণকারী শিক্ষকদের অ্যান্ড্রয়েড ফোন কিংবা ল্যাপটপ বা কম্পিউটার থাকা জরুরি, থাকতে হবে ইন্টারনেট সংযোগও। পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক তৃণমূল শিক্ষক সমিতির কার্যকরী সভাপতি বিজন সরকার রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘মাইক্রোসফ্টের মতো সংস্থার তরফ থেকে শিক্ষকেরা এই ধরনের প্রশিক্ষণ পেয়ে লাভবান হতে পারবেন বলেই আমরা মনে করছি। সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কুল শিক্ষা দফতর। শিক্ষকেরা যাতে নিজেদের দায়িত্ব ও বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে আরও বেশি সচেতন হতে পারেন। সেই ভাবনা থেকেই হয়তো সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’ তবে বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় জাতীয় শিক্ষানীতির বিরোধিতা করছে। আবার তারাই কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি মেনে বহুজাতিক সংস্থাগুলিকে শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে। রাজ্য সরকারের কথায় ও কাজে মিল থাকছে না।’’