Gita Vs Chandi

বঙ্গে ‘পাল্টা’ রাজনীতি তুঙ্গে, মোদীর গীতাপাঠের জবাবে মমতাকে ডেকে চণ্ডীপাঠ? ভোটের আগে ‘অন্য’ লড়াই

সামনেই লোকসভা নির্বাচন। তার আগে ক্রমেই তপ্ত হচ্ছে রাজ্য রাজনীতি। শাসক তৃণমূল এবং বিরোধী দল বিজেপির মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লড়াই লেগেই রয়েছে। এরই মধ্যে আর এক পাল্টার প্রস্তুতি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৫:৫৬
Share:

প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী। — ফাইল চিত্র।

রাজ্যে তুঙ্গে পাল্টা রাজনীতি। চোরের পাল্টা পকেটমার মন্তব্য থেকে এফআইআরের লড়াই চলছেই। এ বার গীতা বনাম চণ্ডীর রাজনৈতিক লড়াইয়ের সম্ভাবনা। আগামী ২৪ জানুয়ারি অখিল ভারতীয় সংস্কৃত পরিষদের উদ্যোগে কলকাতার ব্রিগেড ময়দানে ‘লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ’ কর্মসূচি রয়েছে। তাতে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আমন্ত্রণ জানানোর কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। তার পরে পরেই কলকাতায় চণ্ডীপাঠের জমায়েত করতে চায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সনাতন ব্রাহ্মণ ট্রাস্ট। এখনও দিনক্ষণ পাকা না হলেও মঙ্গলবারই সংগঠনের কর্তারা রাজ্যের দুই মন্ত্রী অখিল গিরি এবং ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে কথা বলেছেন। তবে এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই বলেও দাবি করেছে ওই সংগঠন।

Advertisement

লোকসভা নির্বাচনের আগে ক্রমেই শাসক তৃণমূল বনাম প্রধান বিরোধী দলের সংঘাত শুরু হয়ে গিয়েছে। কয়েক দিন আগেই নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলীয় সভায় মমতা বলেন, ‘‘ওরা আমাদের চার জন এমএলএ-কে জেলে ভরে রেখেছে। এই ভাবে আমাদের সংখ্যা কমিয়ে দিতে চাইছে। চুরির বদনাম দিয়ে ওরা যদি আমাদের চার জনকে জেলে ভরে রাখে, তা হলে আমরাও দলের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি, ওদের আট জনকে জেলে ভরব।’’ এর পরেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘এই কথার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর হওয়া উচিত। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম পড়ে হেয়ার স্ট্রিট থানা এলাকায়। আমি সেখানে গিয়ে মমতার বিরুদ্ধে এফআইআর করব।’’

পাল্টা রাজনীতির বড় জায়গা হয়ে উঠেছে ওই হেয়ার স্ট্রিট থানা। রাজ্য বিধানসভা ওই থানার এলাকার মধ্যেই পড়ে। সম্প্রতি বিধানসভা চত্বরে ‘মমতা চোর’ লেখা পোশাক পরা এবং স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে হেয়ার স্ট্রিট থানায় বিজেপি বিধায়কদের নামে অভিযোগ জানিয়েছে তৃণমূল। তার পাল্টা ‘মোদী চোর’ বলার অভিযোগে তৃণমূল বিধায়কদের বিরুদ্ধে মঙ্গলবারই হেয়ার স্ট্রিট থানায় পাল্টা এফআইআর করেছে বিজেপির পরিষদীয় দল।

Advertisement

সেই আবহেই এ বার গীতা বনাম চণ্ডী লড়াই? এই প্রশ্নে রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল বলেন, ‘‘এ রকম একটা প্রস্তাব অনেক আগেই এসেছিল। এখনও বিষয়টা আলোচনার স্তরে রয়েছে। ওই সংগঠনের অনেকে আমার জেলা পূর্ব মেদিনীপুরের। তাঁরা আমার কাছে এসেছিলেন। দলীয় স্তরে এ নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। তবে এটা পরিষ্কার যে, এই সম্ভাব্য অনুষ্ঠানের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’ উদ্যোক্তরা এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে চাইছেন। তবে কি মোদীর গীতাপাঠের পাল্টা মমতার চণ্ডীপাঠ? অখিল বলেন, ‘‘ওঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে চাইছেন। চাইতেই পারেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী যাবেন কি না সে বিষয়ে তো কিছুই ঠিক হয়নি।’’

শুধু অখিল নয়, রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গেও মঙ্গলবার দেখা করেন উদ্যোক্তারা। ওই সংগঠনের সম্পাদক তপনকুমার মিশ্র বলেন, ‘‘আমার দুই মন্ত্রীর কাছে সহায়তা চেয়ে দেখা করেছি। দু’জনেই আশ্বাস দিয়েছেন। কোথায় হবে বা কবে হবে সে সব ঠিক করার পরে জানাতে বলেছেন।’’ দিনক্ষণ ঠিক করার জন্য বুধবারই ওই সংগঠনের জেলা প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠক চলার মধ্যেই তপনকুমার বলেন, ‘‘এখন দিনক্ষণ কিছু ঠিক হয়নি। জানুয়ারি মাসে হওয়ারই সম্ভাবনা। আমরা কলকাতার রানি রাসমনি রোডে অনুষ্ঠান করতে চাই।’’ কেন এমন উদ্যোগ? তপনকুমার বলেন, ‘‘সারা বছর আমার গণবিবাহ, গণউপনয়ন ইত্যাদি করে থাকি বিভিন্ন জায়গায়। এ বার কলকাতায় বঙ্গ সংস্কৃতি রক্ষা, মানুষের কল্যাণ এবং বিশ্ব শান্তির কামনায় যজ্ঞ এবং চণ্ডীপাঠের পরিকল্পনা রয়েছে।’’ গীতাপাঠের আয়োজকরা মোদীর পাশাপাশি মমতাকেও আমন্ত্রণ জানানোর কথা বলেছেন। তবে চণ্ডীপাঠের আয়োজকরা তেমনটা চাইছেন না। তপনকুমার বলেন, ‘‘এটা তো দেশের ব্যাপার নয়। রাজ্যের বিষয়। তাই প্রধানমন্ত্রী নয়, আমার শুধু রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান হিসাবে মুখ্যমন্ত্রীকেই আমন্ত্রণ জানাতে চাই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement