অমিত শাহ নিজস্ব চিত্র
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের সব জেলায় বোমা তৈরির কারখানা রয়েছে। অমিতের ওই দাবির প্রেক্ষিতে বাংলার কোথায় কোথায় বোমা তৈরির কারখানা রয়েছে তথ্যের অধিকার আইনে তা জানতে চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে আবেদন করেন সাকেত গোখলে নামের এক ব্যক্তি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক অবশ্য এ বিষয়ে কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি বলে দাবি তৃণমূলের। রাজ্য ওই সংক্রান্ত তথ্য দিতে পারে বলেও সাকেতকে জানিয়েছে কেন্দ্র। গোটা বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর। তৃণমূলের দাবি, নির্বাচনে জিততে বাংলার বদনাম করার জন্য এমন মন্তব্য করেছিলেন অমিত। বিজেপি-র পাল্টা দাবি, সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে এমন কোনও নির্বাচন হয়নি যেখানে বোমার আওয়াজ শোনা যায়নি।
গত বছরের অক্টোবরে একটি সর্বভারতীয় টিভি চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে অমিত দাবি করেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের সব জেলায় বোমা তৈরির কারখানা রয়েছে। শুধু অমিত একা নন, রাজ্য বিজেপি-র অনেক নেতাই প্রায়ই এই অভিযোগ তোলেন। সেই প্রেক্ষিতেই তথ্যের অধিকার আইনে সবিস্তারে জানতে চেয়ে ওই মাসেই আবেদন করেন সাকেত। আবেদনে বলা হয়, কীসের ভিত্তিতে অমিত ওই দাবি করেছিলেন? তিনি কি জেলা অনুযায়ী বোমা তৈরির কারখানাগুলির তালিকা দিতে পারবেন? রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও দফতর, সংস্থা বা পুলিশ কি তাঁকে এই তথ্য জানিয়েছে? যদি তিনি জেনেই থাকেন তবে তিনি কেন রাজ্য সরকার বা রাজ্য পুলিশকে সে কথা জানাননি? সাকেতের ওই আবেদনের জবাব আসে গত ৩ মার্চ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এ বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনও তথ্য নেই। তা ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়। রাজ্যই সেই তথ্য দিতে পারে।
প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কীসের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ওই মন্তব্য করেছিলেন? এ নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সঠিক ব্যাখ্যা দিতে না পারায় অমিতকে মিথ্যাবাদী বলে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘‘শুধুমাত্র নির্বাচনে জেতার জন্য বাংলার বদনাম করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। রাজ্যের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কিছু না জেনেই উনি এ রকম মন্তব্য করেছেন। তাঁর এই বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে বাংলাকে এবং বাঙালিকে অপমান করা হয়েছে।’’
অন্য দিকে, রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘তৃণমূল জমানায় বোমার আওয়াজ ছাড়া কোনও নির্বাচন হয় না। প্রতিদিন রাজ্যের কোথাও না কোথাও বোমা উদ্ধার হচ্ছে। তা ছাড়া রাজ্য সরকার তো ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর তথ্য পাঠায়নি কেন্দ্রকে। তা হলে কেন্দ্র কী ভাবে জানাবে তা।’’