মেট্রোর কাজে ‘উধাও’ পথ ফিরছে দশক পরে

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার (সিভিল) বিশ্বনাথ দেওয়ানজি বলেন, ‘‘বঙ্গবাসী মোড় থেকে মহাত্মা গাঁধী রোড পর্যন্ত এলাকা সংস্কারের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব তা শেষ করার চেষ্টা হচ্ছে।’’

Advertisement

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৯ ০২:০৩
Share:

রুদ্ধ-পথ: মেট্রোর কাজের জন্য হাওড়া ময়দানে এই বন্ধ থাকা রাস্তাই খুলতে চলেছে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

দশ বছর পরে হারানো পথ ফিরে পাচ্ছে হাওড়া শহর।

Advertisement

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জন্য প্রায় এক দশক অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছে শহরের প্রাণকেন্দ্র হাওড়া ময়দান। ওই এলাকাটিকে আগের চেহারায় ফিরিয়ে দেওয়ার কাজ এ বার শুরু করলেন ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, সব কিছু ঠিক মতো চললে দুর্গাপুজোর আগেই রাস্তার একাংশ খুলে দেওয়া হবে। তবে পুরো এলাকাটি সাজিয়ে আধুনিক চেহারা দিতে ঠিক কত দিন লাগবে, সেই দিনক্ষণ এখনই বলতে চাননি তাঁরা। মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি, ২০২১ সালের জুন মাসের মধ্যে হাওড়া থেকে মেট্রো চলবে। তার মধ্যে সব কাজ শেষ হয়ে যাবে।

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার (সিভিল) বিশ্বনাথ দেওয়ানজি বলেন, ‘‘বঙ্গবাসী মোড় থেকে মহাত্মা গাঁধী রোড পর্যন্ত এলাকা সংস্কারের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব তা শেষ করার চেষ্টা হচ্ছে।’’ বিশ্বনাথবাবু না বললেও মেট্রোর নির্মাণকারী সংস্থা ‘কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড’ (কেএমআরসিএল)-এর দাবি, যে গতিতে কাজ হচ্ছে, তাতে পুজোর মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।

Advertisement

উল্লেখ্য, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর এক দিকের প্রান্তিক স্টেশন হল হাওড়া ময়দান। শহরের প্রাণকেন্দ্র ওই জায়গায় মেট্রোর কাজের জন্য ২০০৮ সালের পরে ধাপে ধাপে ময়দান মার্কেট, জি টি রোড এবং ওই রাস্তা সংলগ্ন বাসস্ট্যান্ড বন্ধ করে দেওয়া হয়। পুরনো জি টি রোড কার্যত চলে যায় ভূগর্ভে। চরম সমস্যায় পড়েন মঙ্গলাহাটে আসা ব্যবসায়ীরা। অসুবিধা দেখা দেয় যান চলাচলেও। অবশেষে মেট্রোর জন্য রাস্তা খোঁড়ার কাজ শুরু হয় ২০০৯ সালে। এক বছর চলার পরে তৎকালীন হাওড়া পুরবোর্ডের আপত্তিতে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ফের তা শুরু হয় ২০১১ সালে। হাজার অসুবিধা সত্ত্বেও ভবিষ্যতে মেট্রো চলার স্বপ্নে এলাকার বাসিন্দারা সেই দুর্ভোগ মেনে নিয়েছিলেন।

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া ময়দান স্টেশন তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। মেঝেতে গ্রানাইট বসানোর কাজ আগামী মাসেই শেষ হয়ে যাবে। মাটির উপরে যেখানে রাস্তা খোঁড়া হয়েছিল, সেখানে সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে।

বিশ্বনাথবাবু বলেন, ‘‘এখনই পুরো এলাকায় সংস্কারের কাজ শুরু হবে না। কারণ শৈলেন মান্না স্টেডিয়ামের পাশে যেখানে সুড়ঙ্গে নেমে কাজ করা হচ্ছে, সেটি এখন বোজানো যাবে না। তা ছাড়া বাকি অংশের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।’’ তিনি জানান, হাওড়া ময়দান এলাকাটি সাজানোর জন্য নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আগের থেকে অনেকটাই পার্থক্য হবে। ট্র্যাফিকের নকশা-সহ আরও বিভিন্ন জিনিস পাল্টাতে হচ্ছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে হাওড়া পুরসভা ও হাওড়া সিটি পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ এগোচ্ছে।

মেট্রোর নির্মাণকারী সংস্থা কেএমআরসিএল-এর কর্তাদের বক্তব্য, অনেকগুলি বিষয় মাথায় রেখে কাজ করতে হচ্ছে। যেমন বঙ্কিম সেতুতে বাস ওঠা ও সেতু থেকে নামার রাস্তা তৈরি করা, রাস্তার ধারের লেনগুলিতে যান চলাচলের ব্যবস্থা ঠিক রাখা, জি টি রোডকে পর্যাপ্ত জায়গা দেওয়া প্রভৃতি। তাঁদের দাবি, আধুনিক মানের পরিবহণ ব্যবস্থা যেমন হওয়া উচিত, তেমন ভাবেই হাওড়া ময়দানকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement