Kalighat Temple

কালীঘাট মন্দির সংস্কার: রিলায়্যান্সের হাতে দায়িত্ব গেল মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যস্থতাতেই

রিলায়্যান্স গোষ্ঠী সংস্কারের কাজ শুরু করে দিয়েছে। সংস্কার চললেও মন্দির বন্ধ থাকবে না। মন্দির কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, সব ঠিকঠাক চললে আগামী ডিসেম্বরেই নব রূপে দেখা যাবে মন্দিরকে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২৩ ১৮:২৯
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

কালীঘাট মন্দির সংস্কারের দায়িত্ব নিতে এগিয়ে এসেছে মুকেশ অম্বানীর রিলায়েন্স গোষ্ঠী। নেপথ্যে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মন্দির কমিটির সূত্র জানা যাচ্ছে, গত চৈত্র সংক্রান্তিতে কালীঘাট মন্দিরে পুজো দিতে যান মুখ্যমন্ত্রী। তখনই কমিটির কাছে মন্দির সংস্কারের বিষয়ে জানতে চান তিনি। মন্দির কমিটির একাংশের দাবি, সংস্কারে বিলম্ব হওয়ার কথা শুনেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরেই তিনি উদ্যোগী হয়ে রিলায়েন্স গোষ্ঠীকে মন্দির সংস্কারের দায়িত্ব নিতে বলেন।

Advertisement

২০১৯ সালে কালীঘাট মন্দির সংস্কারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কলকাতা পুরসভাকে। মন্দির কমিটি ও পুরসভার মধ্যে কথাবার্তায় ঠিক হয়, ১৮ মাসের মধ্যে কালীঘাট মন্দির সংস্কার শেষ করা হবে। সেই মতো কাজও শুরু হয়। কিন্তু প্রায় ৪ বছর পরেও মন্দির সংস্কারের কাজ শেষ হয়নি। এ সব জানার পরই মুখ্যমন্ত্রী মন্দির সংস্কারের দায়িত্ব রিলায়েন্স গোষ্ঠীকে দেওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হন।

চলতি মাসে রিলায়্যান্স গোষ্ঠী সংস্কারের কাজ শুরু করে দিয়েছে। সংস্কার চললেও অবশ্য মন্দির বন্ধ থাকবে না। কালীঘাট মন্দির কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ছ’মাস কাজ চলবে। সব ঠিকঠাক চললে আগামী ডিসেম্বর মাসেই নব রূপে দেখা যাবে কালীমন্দিরকে। মন্দির কমিটি চায়, ডিসেম্বর মাসে নতুন রূপের দারোদ্ঘাটন করুন মুখ্যমন্ত্রীই।

Advertisement

সংস্কারের দায়িত্ব হাতবদল হওয়ায় মন্দির কমিটি খুশি। তাঁদের অভিযোগ ছিল, ৪ বছর ধরে পুরসভা সংস্কারের দায়িত্বে থাকলেও, কাজ হয়েছিল মন্থর গতিতে। কিন্তু এর পাল্টা যুক্তি রয়েছে কলকাতা পুরসভার কাছেও। ৮৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মন্দির কমিটির উচিত আগে বাস্তব পরিস্থিতি বুঝে অভিযোগ করা। ২০১৯ সালের অগস্ট মাসে সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছিল। দীর্ঘ লকডাউনে কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছিল। তার পর কালীঘাট মন্দির চত্বর থেকে দোকান সরাতে পুরসভাকে যে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে, তা-ও মন্দির কমিটির জানা। এ ছাড়া বারো মাসে তেরো পার্বণ, অমাবশ্যা, পূর্ণিমা তিথি-সহ এমন অনেক দিন রয়েছে, যখন মন্দিরে এত বেশি ভক্তদের সমাগম হয় যে, ইচ্ছে থাকলেও কাজ করতে পারেনি পুরসভা।’’

তবে মন্দির কমিটি এখন আর এ সব নিয়ে বিতর্ক চাইছে না। কমিটির সহ-সভাপতি বিদ্যুৎ হালদার বলেন, ‘‘আমরা দ্রুত মন্দিরের সংস্কার চেয়েছিলাম। মুখ্যমন্ত্রী মন্দিরের কথা ভেবে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আশা করি এ বার যথা সময়ে মন্দিরের সংস্কার হবে। আর ভক্তদের জন্য সুসজ্জিত কালীমন্দির উপহার দিতে পারব আমরা। তাই এখন আর পুরনো কথা আলোচনা করতে চাই না।’’

মন্দির কমিটি সূত্রে খবর, মূল মন্দির, গর্ভগৃহ, ভোগঘর, নাটমন্দির, শিবমন্দির, কুণ্ডপুকুর, মন্দিরের চাতাল-সহ ভিতরে এবং বাইরের দেওয়াল, বলির জায়গা-সহ গোটা মন্দির চত্বর সংস্কার হবে। তবে সংস্কারের যাবতীয় কাজ হবে কালীঘাট মন্দিরের ঐতিহ্য বজায় রেখেই। মা কালীর গর্ভগৃহ, ভোগঘর, নাটমন্দির, শিবমন্দির গ্রেড ‘এ’ হেরিটেজের তালিকাভুক্ত। তাই সংস্কারের জন্য এ ক্ষেত্রে কলকাতা পুরসভার হেরিটেজ কমিটি ও হেরিটেজ কমিশনের অনুমতি প্রয়োজন হবে। প্রথমে মন্দিরের বাকি অংশের কাজ শুরু হবে। পুরসভা ও হেরিটেজ কমিশনের অনুমতি পাওয়া গেলে কালীপুজোর পর মূল মন্দির ও গর্ভগৃহের সংস্কারের কাজ শুরু হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement