অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা নারুলা বন্দ্যোপাধ্যায় (বাম দিকে)। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
বিদেশে যাওয়ার বিষয়ে তদন্তকারী সংস্থা ইডিকে জানিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা নারুলা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার এমনটাই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় মৃত ৪ জনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী দ্বিতীয় হুগলি সেতুর টোল প্লাজা থেকে জানান, দুর্ঘটনায় আহতদের দেখতে মঙ্গলবার তিনি ওড়িশার কটক এবং ভুবনেশ্বরে যাবেন। সেখানেই সংবাদমাধ্যমের তরফে তাঁকে অভিষেক-পত্নীকে বিমানবন্দরে আটকানো নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। সেখানেই তিনি রুজিরার বিদেশযাত্রার কারণ জানিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘অমানবিকতা’ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
সোমবার এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে ‘ওরা ভাল বলতে পারবে’ জানিয়েও মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ও (রুজিরা) একটা পঞ্জাবি মেয়ে। ওর মা খুব অসুস্থ।” তারপরই শীর্ষ আদালতের নির্দেশের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মমতা বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি দেওয়া ছিল। যদি ও কখনও বাইরে যায়, তবে ইডিকে জানাবে। সেই অনুযায়ী ও ইডিকে জানিয়েছে অনেক দিন আগেই। তখন ইডি বলতে পারত তুমি যেও না।” তারপরই ইডির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “কিন্তু বিমানবন্দরে গিয়ে নোটিস ধরানো হাতে, যে ৮ তারিখে তুমি এসো... অমানবিক জিনিস চলছে।”
কয়লা পাচার মামলায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেকের স্ত্রী রুজিরাকে তলব করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। ইডি সূত্রে খবর, আগামী বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় তাঁকে তদন্তকারী সংস্থার দফতর, সিজিও কমপ্লেক্সে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছে। সোমবার সকালেই কলকাতা বিমানবন্দরে রুজিরাকে আটকায় অভিবাসন দফতর। সূত্রের খবর, ২ সন্তানকে নিয়ে তিনি দুবাইয়ের বিমান ধরার জন্য বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন। বিমান ধরার আগেই তাঁকে ‘বাধা’ দেন অভিবাসন দফতরের কর্মীরা। বেশ কিছু ক্ষণ অপেক্ষা করার পর বিমানবন্দর ছেড়ে বেরিয়ে যান অভিষেক-পত্নী।
সকাল ৭টা নাগাদ ২ সন্তানকে নিয়ে বিমানবন্দরে পৌঁছন রুজিরা। দুবাইয়ের বিমান ধরার কথা ছিল তাঁর। বিমান ধরার আগেই অভিবাসন দফতরের কর্তারা তাঁকে বাধা দেন। অভিবাসন দফতর সূত্রের খবর, ইডির একটি মামলায় ‘লুক আউট’ নোটিস জারি হয়েছে রুজিরার নামে। তাই তাঁর বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ রয়েছে বলে দাবি করেছে তারা। যদিও অভিষেকের ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর, ইডির ওই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট অভিষেক এবং রুজিরাকে রক্ষাকবচ দিয়ে জানিয়েছিল, তাঁদের বিদেশযাত্রার ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই। তা সত্ত্বেও রুজিরাকে বিমানবন্দরে বাধা দেওয়ার বিরুদ্ধে অভিষেক আইনি পদক্ষেপ করতে পারেন বলে সূত্রের খবর। সে ক্ষেত্রে আবার আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক।