শান্তনুর বিরুদ্ধে আদালতে ‘সরব’ ইডি। ফাইল চিত্র।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আরও বেশ কিছু তথ্য হাতে পাওয়া গিয়েছে বলে আদালতে দাবি করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তাঁর জামিনের আর্জির বিরোধিতা করে প্রভাবশালী-তত্ত্বকেই আরও এক বার খাড়া করেছেন ইডির আইনজীবী। শান্তনুর আইনজীবী তাঁর জামিনের আর্জি জানালেও ইডির তরফে তাঁকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১১ দিন নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে।
প্রভাবশালী তত্ত্বের সপক্ষে ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি আদালতে যুক্তি দিয়ে জানান, ২৪ ঘণ্টা শান্তনুর সঙ্গে ২ জন নিরাপত্তারক্ষী থাকেন। এই প্রেক্ষিতেই ইডি দাবি করে যে, শান্তনু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বলেই প্রাণসংশয়ের আশঙ্কা করতেন। ইডির সওয়ালে উঠে আসে শান্তনুর বিপুল সম্পত্তির কথাও। ২০১৫ সালে সামান্য মোবাইলের দোকানদার থেকে কী ভাবে শান্তনু ৫১ কাটা জমির মালিক, রিসর্ট, রেস্তোঁরার মালিক হলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন ইডির আইনজীবী।
সওয়াল জবাব পর্ব চলার সময়ই ইডি দাবি করে যে, তারা তদন্ত করে দেখেছে শান্তনুর ফোনে ২০১২ সালের টেট পরীক্ষার্থীদের একাংশের অ্যাডমিট রয়েছে। যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের অ্যাডমিট কার্ড কীভাবে শান্তনুর ফোনে এল, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলে ইডি। শান্তনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বহু সম্পত্তির মালিক হিসাবে তাঁর স্ত্রীয়ের নাম রেখেছেন। এই প্রসঙ্গে ইডি সোমবার আদালতে জানায়, শান্তনু যদি এই সব সম্পত্তির বিষয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি করেন, তবে তাঁর স্ত্রীকেও তদন্তের আওতায় আনতে হবে। ইডি সূত্রে আগেই জানা গিয়েছিল শান্তনুর বাড়ি থেকে ৩০০ জন চাকরিপ্রার্থীর নামের তালিকা পাওয়া গিয়েছে। এই প্রসঙ্গে ইডি জানায়, এই তালিকায় নাম থাকা বেশ কয়েকজন চাকরি পেয়েছেন। দুর্নীতির ব্যাপকতা বোঝাতে ইডির কৌঁসুলি একে হিমালয়ের সঙ্গে তুলনা করেন। দাবি করেন যে, দুর্নীতির অঙ্ক এখনও পর্যন্ত ৩৫০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। প্রতিদিনই নিত্যনতুন তথ্য হাতে আসছে বলেও দাবি করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। সোমবারই শান্তনুর ২ দিনের ইডি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হয়। তারপর তাঁকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করা হয়। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে আগামী ২৪ মার্চ পর্যন্ত পর্যন্ত শান্তনুকে ইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।