Mamata Bandyopadhyay

আর ভোটে দাঁড়াতে চান না, মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন প্রাক্তন মন্ত্রী রবিরঞ্জন

মমতাকে রবিরঞ্জন জানিয়েছেন, অসুস্থতার কারণেই আর তিনি ভোটে দাঁড়াতে চান না।

Advertisement

Amit Ray

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৩:৫৪
Share:

আগামী বিধানসভা নির্বাচনে আর লড়েতে চান না রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। গত ৩০ জানুয়ারি চিঠি লিখে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। যদিও চিঠিটি প্রকাশ্যে এল বুধবার। চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছিল তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকেও। চিঠি পাঠানোর বিষয়টি স্বীকার করে আনন্দবাজার ডিজিটালকে রবিরঞ্জন বলেছেন, ‘‘প্রত্যেককেই কোথাও না কোথাও থামতে হয়। আর আমার থেমে যাওয়ার প্রকৃত সময় এটাই। তাই দলনেত্রীকে জানিয়ে দিয়েছি।’’

Advertisement

মমতাকে রবিরঞ্জন জানিয়েছেন, অসুস্থতার কারণেই আর তিনি ভোটে দাঁড়াতে চান না। তাঁকে দু’টি পর্যায়ে বর্ধমানের মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন রবিরঞ্জন। শুধু ভোটে না দাঁড়ানোই নয়, রাজনীতি থেকেও অবসর নিতে চান এই অশীতিপর বিধায়ক। সদ্যসমাপ্ত ষষ্ঠদশ বিধানসভার শেষ অধিবেশনেও যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তারপরেই এমন সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশ্যে জানালেন এই অধ্যাপক। সূত্রের খবর, তাঁর জায়গায় প্রাক্তন আইপিএস হুমায়ুন কবিরকে টিকিট দেওয়ার বিষয়ে প্রাথমিক ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। তৃণমূলের একাংশের বক্তব্য, সেই কারণেই হুমায়ুনকে মঙ্গলবার দলনেত্রীর উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দেওয়ানো হয়েছে।

তবে ২০১১ সালের বর্ধমান দক্ষিণ আসনে তাঁর প্রার্থী হওয়ার ঘটনাও ঘনঘটার কম নয়। ২০১১ সালে তত্কালীন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেনের বিরুদ্ধে তৃণমূল প্রার্থী করা হয়েছিল চিকিত্সক স্বরূপ দত্তকে। কিন্তু বর্ধমান জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব তো বটেই, সাঁইবাড়ির তরফেও তাঁর বিরুদ্ধে আপত্তি জানানো হয় তৃণমূলনেত্রীর কালীঘাটের বাড়ির লাগোয়া দফতরে। বর্ধমান দক্ষিণ আসন থেকে স্বরূপকে প্রার্থী হিসাবে প্রত্যাহার করে তৃণমূল। তার পরে অধুনাপ্রয়াত সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবীর সুপারিশেই লেকটাউনের বাসিন্দা তথা বিদ্বজ্জন সমাজের প্রতিনিধি রবিরঞ্জনকে সিপিএমের দুর্গে প্রার্থী করে দেন মমতা। তত্কালীন শিল্পমন্ত্রী নিরুপমকে হারিয়ে মমতার প্রথম মন্ত্রিসভায় কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী হন রবিরঞ্জন। পরে দফতর বদল করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতরের মন্ত্রী ছিলেন কিছুদিন। কিন্তু ২০১৬ সালে তৃণমূল দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর তাঁকে আর মন্ত্রী করা হয়নি।

Advertisement

আরও পড়ুন:

গত বছর অগস্ট মাসে তাঁর পরিবারের কারণে বিতর্কেও জড়িয়েছিলেন রবিরঞ্জন। আমেরিকার একটি প্রথমসারির সংবাদপত্র জানায়, ভারতের শাসকদল বিজেপি-র নেতাদের ‘বিদ্বেষমূলক মন্তব্য’ ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃত ভাবে ‘বাদ’ দিচ্ছেন। আলোড়ন পড়ে ভারতীয় রাজনীতিতে। কংগ্রেস এবং সিপিএম একযোগে ফেসবুকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে, তারা বিজেপি-র হয়ে কাজ করছে। অভিযোগের আঙুল ওঠে ভারতে ফেসবুকের কর্ত্রী আঁখি দাসের বিরুদ্ধে। ঘটনাচক্রে, যিনি রবিরঞ্জনের পুত্রবধূ। এই সম্পর্ককে ‘হাতিয়ার’ করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচার শুরু করে সিপিএম। মমতার সঙ্গে আঁখির ছবি নেটমাধ্যমে ভাইরাল করে বিজেপি-তৃণমূল যোগ প্রমাণে মরিয়া চেষ্টা চালায় সিপিএম এবং পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেস। বিষয়টি নিয়ে সরব হন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীও। ওই ঘটনা ঘিরে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল রবিরঞ্জন ও তৃণমূলের মধ্যে। এবার সেই সম্পর্ক পুরোপুরি শেষ হতে চলেছে। এদিন আনন্দবাজার ডি়জিটালকে রবিরঞ্জন জানিয়েছেন, তিনি আর রাজনীতি করতে চান না। এবার শুধুই অবসর। দলের অন্য সতীর্থরা বিজেপি-তে গেলেও অন্য রাজনৈতিক দলে নাম লেখাতে নারাজ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রাক্তন অধ্যাপক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement