বিরোধীদের তোপ রবিশঙ্কর প্রসাদের। —ফাইল চিত্র
বাটলা হাউস সংঘর্ষ কাণ্ডে (২০০৮) অভিযুক্ত ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন জঙ্গি আরিজ় খানকে দিল্লির আদালত গত কাল দোষী সাব্যস্ত করার পরেই শুরু হল রাজনৈতিক জলঘোলা। আজ কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ তোপ দাগলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সনিয়া গাঁধী, অরবিন্দ কেজরীবালের মতো বিরোধী নেতানেত্রীদের প্রতি। তাঁর অভিযোগ, বাটলা হাউস অভিযান নিয়েই সংশয় প্রকাশ করেছিলেন বিরোধী নেতৃত্ব।
রবিশঙ্করের কথায়, ‘‘কংগ্রেস নেতৃত্ব, মমতাদিদি এবং আরও যাঁরা বাটলা হাউস এনকাউন্টার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁরা এখন নীরব কেন? এখন তো আদালত এই মামলায় রায় দিয়ে দিয়েছে।” ওই অভিযান নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করায় দিল্লি পুলিশের মনোবল নষ্ট হয়েছিল বলে অভিযোগ তাঁর। রবিশঙ্কর জানিয়েছেন, ”এমন এক স্পর্শকাতর ঘটনাতেও যে ভাবে বিরোধীরা সস্তা রাজনীতি করেছেন বিজেপি তার নিন্দা করছে। বিশেষ করে ওই ঘটনার সঙ্গে দেশের নিরাপত্তার মতো বিষয় জড়িয়ে রয়েছে। তাঁরা কি এ বার ক্ষমা চাইবেন?” কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর খোঁচা, ‘‘আপনারা হয়তো শুনেছেন সলমন খুরশিদ বলেছিলেন, দুই জঙ্গির মৃত্যুর খবরে সনিয়া গাঁধীর চোখে জল এসেছিল।‘’
সংসদের বাজেট অধিবেশনে যোগ দিতে দিল্লি এসেছেন তৃণমূলের লোকসভার সাংসদ সৌগত রায়। তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘পুলিশ, পুলিশের কাজ করেছে। সরকার, সরকারের কাজ করেছে। আদালত তার কাজ করেছে। এতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের করার বা বলার কী আছে? অন্য সকলের মতোই তিনিও জানতে চেয়েছিলেন ঘটনাটি সম্পর্কে।’’ সৌগতবাবুর মতে, রবিশঙ্কর ‘ফেক নিউজ়’ বিশেষজ্ঞ। মিথ্যে কথা রটানোয় পারদর্শী। এ নিয়ে মমতার ক্ষমা চাইবার কোনও প্রশ্নই উঠছে না। কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘রবিশঙ্কর প্রসাদ বিষয়টি নিয়ে প্যাঁচ কষছেন। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম কী বলেছিলেন তা কেন দেখা হচ্ছে না? কংগ্রেসের কোনও নেতা স্বাধীন মত ব্যক্ত করতেই পারেন। দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য হতে পারে। সে জন্য তৎকালীন সরকার বা গোটা দলকে দায়ী করা যায় না।’’ অধীরবাবুর প্রশ্ন, ‘‘মোদীজি বলেছিলেন চিনা সেনা ভারতে ঢোকেইনি? সেটা কার বক্তব্য? মোদীজির, দলের না গোটা দেশের?’’
তবে ভোটের মুখে বিষয়টি নিয়ে মমতাকে রাজনৈতিক নিশানা করতে ছাড়ছেন না বিজেপি নেতৃত্ব। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ পরপর টুইট করেছেন এই নিয়ে। তাঁর কথায়, ‘‘২০০৮ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, এটা ভুয়ো সংঘর্ষ। তিনি এমনটাও বলেছিলেন, আমায় যদি ভুল প্রমাণ করতে পারে তাহলে সক্রিয় রাজনীতি ছেড়ে দেব।’’ দিলীপবাবুর কটাক্ষ, এখন ঘটনা হল মমতা তো রাজনীতি ছেড়ে দিতেই চলেছেন। তৃণমূল তাদের এক এবং একমাত্র পোস্টটি হারাতে চলেছে। তাহলে বাকি ল্যাম্পপোস্টগুলির কী হবে? আসলে আদালত আরিজ় খানকে দোষী সাব্যস্ত করায় মমতা হকচকিয়ে গিয়েছেন। বাটলা হাউস কাণ্ডে দিল্লি পুলিশের ‘ওয়ান্টেড’-এর তালিকায় ছিল আরিজ়। ২০১৮ সালে দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল আরিজকে গ্রেফতার করে।