প্রতীকী ছবি।
মহিলার ‘অপরাধ’, মকরসংক্রান্তি উপলক্ষে মেলার জন্য উদ্যোক্তাদের দাবি অনুযায়ী চাঁদা দিতে পারেননি। ‘শিক্ষা দিতে’ বাড়িতে চড়াও হয়ে আসবাবপত্র ভাঙচুর, সেই গরিব মহিলাকে মারধর এবং তাঁর নাবালিকা মেয়েকে ঘরে আটকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠল। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বারুইপুর থানার অন্তর্গত কেয়াতলার ঘোষেরচকের নবগ্রামে। হামলার ২৪ ঘণ্টা পরেও অভিযুক্তেরা গ্রেফতার হয়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই এলাকায় মকরসংক্রান্তি উপলক্ষে মেলা হয়। সেই মেলার জন্য বাড়ি-প্রতি হাজার টাকা চাঁদা ধার্য করা হয়েছে। রেখাবালা মণ্ডল নামে এক মহিলা নাবালিকা মেয়েকে নিয়ে ওই এলাকার একটি বাড়িতে থাকেন। স্বামী মারা গিয়েছেন কয়েক বছর আগে। অভাবের সংসার। চাঁদা চেয়ে কয়েক দিন ধরেই মেলা কমিটির লোকজন তাঁর বাড়িতে যাচ্ছিলেন। অভিযোগ, টাকা না-দেওয়ায় এক দল যুবক সোমবার সকালে রেখাবালার বাড়িতে চড়াও হয়ে আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। তাঁকে মাটিতে ফেলে মারধর করা হয়। মাকে বাঁচাতে যায় মেয়ে। হামলাকারী দলের এক জন তাকে তুলে নিয়ে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। মেয়েকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য দলের অন্যদের হাতে-পায়ে ধরে আর্তনাদ করতে থাকেন রেখাবালা। পরে দলেরই কয়েক জন ঘরের দরজা খুলে ওই নাবালিকাকে বার করে নিয়ে আসে। ওই নাবালিকাকেও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
প্রতিবেশীরা জানান, রেখাবালা বিভিন্ন বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালান। হাজার টাকা চাঁদা দেওয়ার ক্ষমতা তাঁর নেই। প্রায় ১৫ মিনিট ধরে তাঁর বাড়িতে তাণ্ডব চালানো হয়েছে। রেখাবালা বলেন, ‘‘আমি ওই ছেলেদের বার বার বলেছি, হাজার টাকা দিতে পারব না। কয়েকশো টাকা দিতে পারি। কিন্তু ওরা রাজি হয়নি। আমার ঘরের সব জিনিসপত্র ভেঙে দিয়ে গেল।’’
অভিযোগ, রেখাবালার বাড়িতে হামলার পরে বাজারে তাঁর দেওর দিলীপ মণ্ডলের উপরে চড়াও হয় ওই দলের লোকজন। দিলীপ বলেন, ‘‘চাঁদা না-পেলে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে হামলাকারীরা।’’ রাতে বারুইপুর থানায় ওই এলাকার বাসিন্দা নেপাল সর্দার-সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করে রেখাবালার মেয়ে। অভিযুক্তেরা পলাতক বলে জানায় পুলিশ।
‘‘অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে। কয়েকটি সূত্র পাওয়া গিয়েছে। খুব তাড়াতাড়িই ওরা ধরা পড়বে,’’ আশ্বাস দিয়েছেন বারুইপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু।