রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহ। —ফাইল চিত্র।
আদালত অবমাননার মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের কাছে ক্ষমা চাইলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহ। সোমবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে ওই মামলার শুনানি ছিল। হলফনামা দিয়ে এ বিষয়ে নিজের বক্তব্য আদালতকে জানান রাজীব। সেই সঙ্গে নিঃশর্ত ক্ষমাও চেয়েছেন।
পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ কার্যকর করেননি রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব। এই অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়েছিল। তা নিয়ে রাজীবের বক্তব্য জানতে চেয়েছিল আদালত। সোমবার হাই কোর্টে হলফনামা জমা দেন রাজীব।
হলফনামায় রাজীবের বক্তব্য, অনিচ্ছাকৃত ভাবে কোনও ভুল হয়ে থাকতে পারে। তার জন্য আদালতের কাছে তিনি ক্ষমাপ্রার্থী।
রাজীবের হলফনামা গ্রহণের আগে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘হলফনামায় কী দিয়েছেন? কোনও ভাবে আদালত অবমাননা হয়নি? সব কিছু ঠিকঠাক করা হয়েছিল, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছেন— হলফনামায় এ সবই লিখেছেন তো? দেখি কী রয়েছে?’’
তবে হলফনামা হাতে নিয়ে প্রধান বিচারপতি দেখেন, অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির জন্য রাজীব ক্ষমা চেয়েছেন। তাঁর হলফনামার প্রেক্ষিতে মামলায় যুক্ত অন্য পক্ষ পাল্টা হলফনামা দিতে চায়। তার জন্য তিন সপ্তাহ সময় দিয়েছে আদালত। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর করা মামলায় গত ১৩ অক্টোবর রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করে হাই কোর্ট।
পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের আর্জি জানিয়ে গত ডিসেম্বরে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন শুভেন্দু। শুধু তা-ই নয়, অবসরপ্রাপ্ত কোনও বিচারপতির নজরদারিতে পঞ্চায়েত ভোট করানোর আর্জি জানান তিনি। বিভিন্ন প্রচারসভা থেকেই শুভেন্দু অভিযোগ করেছিলেন, রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্রমেই অশান্তি ছড়াচ্ছে। এর পরেই কলকাতা হাই কোর্ট কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতে পঞ্চায়েত ভোট করানোর নির্দেশ দেয়। সময়সীমাও বেঁধে দেয়। রাজ্য নির্বাচন কমিশন যদিও সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। তারা জানায়, হাই কোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে, তা কার্যকর করা সম্ভব নয়। কারণ, ভোটে নিরাপত্তার বিষয়টি দেখে রাজ্য। এ ব্যাপারে অনুরোধ করা তাদের কাজ নয়। শুভেন্দুর অভিযোগ ছিল, সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও সেই নির্দেশ কার্যকর করেনি রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ফলে তারা আদালত অবমাননা করেছে।