মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —গ্রাফিক সনৎ সিংহ।
রেল তথা কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে সোমবার বিকেলে উত্তরবঙ্গের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় জখমদের দেখে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের বাইরে দাঁড়িয়ে সন্ধ্যায় ফের রেলের সমালোচনায় সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতার বক্তব্য, বন্দে ভারতের নামে শুধুই প্রচার হচ্ছে। আর কিছু হচ্ছে না। চূড়ান্ত অবহেলার মুখে ভারতীয় রেল।
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রাক্তন রেলমন্ত্রী মমতা বলেন, ‘‘এখন শুধুই বন্দে ভারতের নামে পাবলিসিটি (প্রচার)। দুরন্ত এক্সপ্রেস ছিল সব চেয়ে দ্রুতগতির ট্রেন। ওটা আমি করে দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন শুধুই অবহেলার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।’’ পাশাপাশিই মমতা বলেছেন, ‘‘আমি রেলকর্মীদের পাশে রয়েছি।’’ মমতার মূল অভিযোগের তির কেন্দ্রীয় সরকার তথা রেল মন্ত্রকের দিকে। তাঁর সুস্পষ্ট অভিযোগ, যাত্রীনিরাপত্তার জন্য পরিকাঠামো উন্নয়ন ব্রাত্য করে রেখে কেবল উপর চকচকানিতে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জখমদের সঙ্গে কথা বলেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে বনগাঁ, বিষ্ণুপুর, পাথরপ্রতিমা, বাকরাহাটের অনেকে রয়েছেন। জখমদের মধ্যে কয়েকটি শিশুও রয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা দু’বার রেলমন্ত্রী ছিলেন। এক বার অটলবিহারী বাজপেয়ীর এনডিএ সরকারের সময়ে। দ্বিতীয় বার মনমোহন সিংহ সরকারের সময়ে। মনমোহন জমানায় অবশ্য দু’বছরের মধ্যেই মমতাকে রেলমন্ত্রিত্ব ছেড়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে হয়েছিল।
সোমবার মমতা অভিযোগ করেন, রেল মন্ত্রকটাকেই গুরুত্বহীন করে দেওয়া হয়েছে নরেন্দ্র মোদীর জমানায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘রেল ছেড়ে লোকে এখন বাইক, সাইকেলে যাতায়াত করছে। রেলের বাজেট তুলে দিয়েছে। গোটাটাকে গুরুত্বহীন করে দেওয়া হয়েছে।’’
মমতার আগেই অকুস্থলে পৌঁছেছিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তিনিও হাসপাতালে গিয়ে জখমদের সঙ্গে দেখা করেন। মমতার অভিযোগ নিয়ে রেলমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘এটা রাজনীতির সময় নয়। আগে আমাদের উদ্ধারকাজে নজর দিতে হবে।’’ মমতা অবশ্য দুর্ঘটনাস্থলে যাননি। তাঁর কথায়, ‘‘ওখানে স্বাভাবিকতা ফিরে এসেছে। তাই আমি ওখানে যাচ্ছি না। সকাল থেকে নজর রেখেছিলাম। আমি খবর পাওয়ার পর চাপড়ার বিধায়ক হামিদুর রহমানকে পাঠিয়েছিলাম।’’