দুর্ঘটনাস্থলে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। —নিজস্ব চিত্র।
কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনাস্থলে সোমবার বিকেলে পৌঁছেছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তিনি জানান, আপাতত উদ্ধারকাজ চলছে। কী কারণে এই ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য নিয়েও নিজের মতামত দিয়েছেন রেলমন্ত্রী।
নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে সোমবার সকালে নির্ধারিত সময়েই রওনা দিয়েছিল কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। নীচবাড়ি এবং রাঙাপানি স্টেশনের মাঝে দুর্ঘটনা ঘটে। পিছন দিক থেকে একটি মালগাড়ি এসে ওই ট্রেনে ধাক্কা মারে বলে খবর। সংঘর্ষের তীব্রতায় কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পিছন দিক থেকে পর পর দু’টি কামরা লাইনচ্যুত হয়ে পাশে ছিটকে পড়ে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত আট জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। জখম হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। বিকেলে দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন, আর কোনও যাত্রী ধ্বংসস্তূপে আটকে নেই। লাইন পরিষ্কার করে ট্রেন চলাচল শুরু করানো হবে।
কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা নিয়ে ভারতীয় রেলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন প্রাক্তন রেলমন্ত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা। বিকালে উত্তরবঙ্গের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে মমতা বলেন, ‘‘রেল অনাথ হয়ে গিয়েছে। দেখার কেউ নেই।’’ শুধু রেলের পরিকাঠামোকে কাঠগড়ায় তোলেননি মমতা। তাঁর অভিযোগ, দূরপাল্লার ট্রেনে রাতের সফরও এখন বিভীষিকার। তাঁর কথায়, ‘‘আমি তো দেখছি, শিয়ালদহে যাত্রীদের কী দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হচ্ছে মাঝেমাঝেই। এ-ও শুনতে পাই, রাতের ট্রেনে যাত্রীদের যে বেডিং (কম্বল-চাদর, বালিশ) দেওয়া হয়, তাতেও অনেক ডার্টি থিংস (নোংরা জিনিসপত্র) থাকে। এই তো হচ্ছে অবস্থা।’’
কয়েক বছর আগে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব রেলের ‘সুরক্ষাকবচ’-এর কথা ঘোষণা করেছিলেন। রেলের তরফে বলা হয়েছিল, এই প্রযুক্তি মুখোমুখি রেল দুর্ঘটনাকে রুখে দেবে। কিন্তু গত বছর করমণ্ডল এবং এ বার কাঞ্চনজঙ্ঘার দুর্ঘটনা সেই ‘কবচ’কেই কঠিন প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে। মমতা বলেন, ‘‘আমি রেলমন্ত্রী থাকাকালীন অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস শুরু করেছিলাম। সেই সময়ে আমি কঙ্কন রেলে ব্যবহার করেছিলাম। নিজে গিয়েছিলাম মারগাঁওয়ে। আজকে কেউ কেউ তার নতুন নাম দিতে পারেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, নতুন নাম দিলেও যাত্রীদের নিরাপত্তা বলে কিছু নেই।’’ মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘এখন শুধু ফ্যাশন হচ্ছে, ঘোষণার নামে কথার ফুলঝুরি হচ্ছে। অথচ কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। এখনও ওড়িশায় অনেক মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। যেগুলিকে চিহ্নিত করা যায়নি।’’
এর প্রেক্ষিতে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘‘এটা রাজনীতির সময় নয়। আগে আমাদের উদ্ধারকাজে নজর দিতে হবে।’’