রিয়া দেবনাথ
রাতেই বামেদের ধর্মঘটের খবর শুনে প্রমাদ গুনেছিলেন অনেকে। সেই দলে ছিলেন পান্ডুয়ার ছাত্রী রিয়া দেবনাথও। পান্ডুয়ার ভোজনপুর গ্রামের বাসিন্দা আইটিআই প্রথম বর্ষের ছাত্রীটির কলেজে পরীক্ষা ছিল। কী ভাবে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছবেন তা নিয়ে রাত থেকে উদ্বেগ কম ছিল না।
পরীক্ষা শুরু সকাল এগারোটায়। পরীক্ষা কেন্দ্র বর্ধমানে। ন’টা সাতাশের ট্রেন ধরতে পান্ডুয়া স্টেশনে এসে রিয়া দেখেন, ট্রেন অবরোধ চলছে। বেশ কিছুক্ষণ প্ল্যাটফর্মে বসার পরে তিনি রেল পুলিশের দ্বারস্থ হন। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। শেষে চোখে জল নিয়ে পান্ডুয়ার সিপিএম বিধায়ক আমজাদ হোসেনের কাছে অবরোধ তোলার আবেদন জানান তিনি। আবেদনে সাড়া দিয়ে বিধায়ক দশটা নাগাদ অবরোধ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। স্বাভাবিক হয় ট্রেন পরিষেবা।
রিয়ার মা দীপালি দেবনাথ জানান, বৃহস্পতিবার থেকে প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়েছে। শুক্রবার ছিল দ্বিতীয় দিনের পরীক্ষা। তিনি বলেন, ‘‘মেয়ে ফোন করতে আমি বলেছিলাম, যাঁরা অবরোধ করেছে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। অবশেষে মেয়ে কিছুটা দেরি হলেও পরীক্ষা দিতে পেরেছে।’’
রিয়া বলেন, ‘‘পান্ডুয়ার জিটি রোডের ধারেই ফুটপাতে ব্যবসা করেন আমার বাবা। সামান্য রোজগার। তার মধ্যেই অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করছি। গাড়ি ভাড়া করে যাওয়ার মতো টাকা আমাদের নেই। এর মধ্যে পরীক্ষা না দিতে পারলে খুব ক্ষতি হত।’’
সিপিএম বিধায়ক আমজাদ হোসেন বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকারের পুলিশ অন্যায় ভাবে আমাদের কর্মী-সমর্থকদের মারধর করেছে। প্রতিবাদে আমরা ১২ ঘন্টার বনধ্ ডেকেছিলাম। সকাল আটটা থেকে বেলা এগারোটা পর্যন্ত পান্ডুয়া স্টেশনে অবরোধের কথা ছিল। এক পরীক্ষার্থী আমার কাছে এসেছিলেন। তিনি বলার সঙ্গে সঙ্গে আমরা ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা করে দিই।’’