এইচএমপি ভাইরাসে বেঙ্গালুরুতে আক্রান্ত আরও এক শিশু। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
বেঙ্গালুরুতে একই দিনে দুই শিশুর শরীরে পাওয়া গেল হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি)-এর
সংক্রমণ। সোমবার সকালে প্রথমে আট মাসের এক শিশুর শরীরে ভাইরাসের হদিস মেলে। পরে তিন মাসের এক শিশুর শরীরেও ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া যায়। তবে চিনে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসের সঙ্গে বেঙ্গালুরুতে এইচএমপি ভাইরাসের সংক্রমণের কোনও যোগ নেই বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।
তিন মাস বয়সি শিশুকে ইতিমধ্যে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আট মাসের শিশুকে বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। সম্প্রতি চিনে এই ভাইরাসের একটি রূপের সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাতে উদ্বেগ দানা বেঁধেছে ভারত-সহ বিভিন্ন দেশে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে স্বাস্থ্য মন্ত্রকও।
পর পর দু’টি সংক্রমণের খবর প্রকাশ্যে আসতেই কর্নাটকের স্বাস্থ্য মন্ত্রী দীনেশ গুন্ডু রাও সোমবার দুপুরে একটি জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। এই বৈঠকে কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়, সে দিকে নজর থাকবে। তবে রাজ্যবাসীকে অযথা উদ্বিগ্ন না হওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন কর্নাটকের স্বাস্থ্যসচিব হর্ষ গুপ্তা। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, এই দুই শিশুর কাউকেই সম্প্রতি অন্যত্র ঘুরতে নিয়ে যাওয়া হয়নি (ট্রাভেল হিস্ট্রি নেই)। ফলে অন্য কোনও দেশ বা অঞ্চলে গিয়ে ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
স্বাস্থ্যসচিব গুপ্তা জানান, এই ভাইরাস নিয়ে চিন্তা করার কোনও প্রয়োজন নেই। এইচএমপিভি ভারতেও রয়েছে। তবে এই ভাইরাসটির কোনও রূপান্তর হয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। চিনে ভাইরাসটির যে রূপ ছড়িয়ে পড়েছে, সেটির গঠনের বিষয়ে এখনও কোনও তথ্য নেই। ফলে এটি ভাইরাসের চিনা রূপ নাকি স্বাভাবিক এইচএমপি ভাইরাসের সংক্রমণ, তা এখনও বলা যাচ্ছে না। সাধারণ এইচএমপি ভাইরাসের ভারতে অতীতেও দেখা গিয়েছে বলে জানান তিনি। তবে স্বাস্থ্য দফতর এই সংক্রমণের ঘটনা খতিয়ে দেখছে বলে জানান স্বাস্থ্যসচিব।
বিশ্বের অন্য দেশগুলিকে উদ্বিগ্ন না-হওয়ার জন্য বলেছে চিনও। তাদের বক্তব্য, এটি একটি মরসুমি সংক্রমণ। শুধুমাত্র ‘শীতকালীন সংক্রমণ’ বলেই এই পরিস্থিতিকে ব্যাখ্যা করছে চিন। ভারতেও কেন্দ্রীয় সরকার দেশবাসীকে অযথা উদ্বিগ্ন না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। একই সঙ্গে এই ভাইরাসের বিষয়ে সময়ে সময়ে তথ্য দেওয়ার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-কেও অনুরোধ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে কেন্দ্র সম্প্রতি জানিয়েছে, এইচএমপিভির মতো ভাইরাসের অস্তিত্ব দেশে ইতিমধ্যেই রয়েছে। এখন স্বাস্থ্য পরিষেবার যা পরিকাঠামো, তাতে এই রোগের মোকাবিলা করায় কোনও সমস্যা নেই। তাই দেশবাসীকে শান্ত এবং সতর্ক থাকতে অনুরোধ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। পাশাপাশি, পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার কথাও বলেছে তারা।