শনিবার উদ্ধার হওয়া টাকার একাংশ। ছবি: ইডির সৌজন্যে
মামলা রুজু হয়েছিল দেড় বছর আগে। কিন্তু তার পর থেকে মোবাইল অ্যাপ জালিয়াতি কাণ্ডে পার্ক স্ট্রিট থানার তদন্ত আদৌ হয়েছিল কি? শনিবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর তল্লাশিতে নগদ টাকা, নথি উদ্ধার হওয়ার পর কলকাতা পুলিশের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে লালবাজার সূত্রের দাবি, প্রাথমিক তদন্তের কাজ কিছু দূর এগিয়েছিল। তার পরেই ২০২১ সালের বিধানসভা ভোট চলে আসে। ভোট শেষের পরে তদন্ত কার্যত ধামাচাপা পড়ে গিয়েছিল।
লালবাজারের কর্তারা বলছেন, তদন্ত কী হয়েছিল বা কেন থমকে গিয়েছিল তা খতিয়ে দেখতে হবে। তবে পুলিশের একাংশ এ-ও কার্যত মেনে নিচ্ছেন যে ইডি হানা না-দিলে ওই অভিযোগের তদন্ত কার্যত অন্ধকারেই ডুবে থাকত। একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের তরফে গুরুতর জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়ার পরেও কেন তদন্ত এ ভাবে থমকে গেল, তা নিয়ে সদুত্তর অবশ্য মেলেনি। তবে পুলিশের একাংশেরই পাল্টা প্রশ্ন, প্রভাবশালী যোগ না-থাকলে কি তদন্ত এ ভাবে থমকে থাকে?
পুলিশ সূত্রের খবর, একটি বেসরকারি ব্যাঙ্ক তাদের নিজস্ব অনুসন্ধান থেকে জানতে পারে, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির পর থেকে কয়েক মাসের মধ্যে ১৬২টি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল। মাত্র ৫-৭ হাজার টাকা ব্যালান্স থাকলেও ওই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে প্রচুর টাকা লেনদেন হয়েছে। সেই অ্যাকাউন্টগুলি ‘ই-নাগেটস’ বলে একটি মোবাইল অ্যাপের সঙ্গে যুক্ত। কোর্টের মাধ্যমে দায়ের করা ব্যাঙ্কের অভিযোগে আমির খানের নামও দেওয়া ছিল। প্রাথমিক তদন্তে ৪০টি অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখা হয়। এর পাশাপাশি রেজ়িস্ট্রার অব কোম্পানিজ়-এর কাছেও ওই সংস্থা সম্পর্কে তথ্য চাওয়া হয়েছিল। তবে প্রতারিত হওয়া কোনও ব্যক্তির সঙ্গে পুলিশের সাক্ষাৎ হয়নি বলেই সূত্রের দাবি।
অনেকে অবশ্য বলছেন, এই ধরনের মামলার তদন্ত দৈনন্দিন কাজ সামলে থানার পক্ষে করা সম্ভব নয়। এই কাজের জন্য গোয়েন্দা বিভাগের সাইবার ক্রাইম, ব্যাঙ্ক জালিয়াতি দমন, স্পেশাল সেলের মতো শাখা আছে। তাদের কাছে না-পাঠিয়ে পুলিশকর্তারা কেন পার্ক স্ট্রিট থানাতেই এই মামলা ফেলে রেখেছিলেন তা নিয়েও প্রশ্ন করা জরুরি।