মদন পাণ্ডে এবং তাঁর ছোট ছেলে কানাই পাণ্ডে।
পিতা-পুত্রকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুনের ঘটনার এক সপ্তাহের মধ্যেই পুলিশের জালে ধরা পড়ল তিন দুষ্কৃতী। শনিবার পুরুলিয়া জেলা আদালতে তোলা হলে ধৃতদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। পাশাপাশি, ধৃতদের বিরুদ্ধে টিআই প্যারেডের আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত শনিবার রাতে জোড়া খুনের অভিযোগে ধৃতদের নাম দীনেশ পাশি, মণ্ডিল ভিবলর এবং মানয় বেদ। ধৃতদের মধ্যে বানজারা সম্প্রদায়ভুক্ত দীনেশের বাড়ি ঝাড়খণ্ডের বোকারোয়। বাকি দু’জন পশ্চিম বর্ধমানের বাসিন্দা। শুক্রবার রাতে আসানসোলের চিত্তরঞ্জন এলাকা থেকে এই দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করেছে জেলা পুলিশ। ৩২ নম্বর জাতীয় সড়কের সিসিটিভি-র ফুটেজ দেখে তাদের শনাক্ত করে সিআইডি।
পুরুলিয়া জেলা পুলিশ জোড়া খুনের ‘কিনারা’ করলেও এই ঘটনায় ‘অন্য রহস্য’ রয়েছে বলে দাবি করেছেন নিহত ব্যক্তির বড় ছেলে রোহিণী পাণ্ডে। তাঁর কথায়, ‘‘এর পিছনে বড় রহস্য রয়েছে। তাই আমি চাই এই খুনের ঘটনায় মূল পান্ডা যদি অন্য কেউ থাকে, তা হলে সে যেন ধরা পড়ে। তারও যেন উপযুক্ত শাস্তি হয়।’’
পুলিশ জানিয়েছে, গত সপ্তাহে শনিবার রাত ৯টা নাগাদ খুন হন পুরুলিয়া মফ্ফসলের কানালি গ্রামের বাসিন্দা মদন পাণ্ডে (৭৫) এবং তাঁর ছোট ছেলে কানাই পাণ্ডে (৩০)। দু’জনেই চাষ রোডের একটি পেট্রল পাম্পের কর্মী ছিলেন। শনিবার রাতে কাজ সেরে মোটরবাইকে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন তাঁরা। সে সময় রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন কানালি গ্রামের বাসিন্দা দীপেন মাহাতোও। আচমকাই তাঁদের সামনে এসে পড়ে দুষ্কৃতীরা। তিন জনের উপরেই লাঠি ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা হয়। তবে কোনও মতে পালিয়ে বাঁচেন দীপেন। মাথায় ধারালো অস্ত্রের কোপে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন পিতা-পুত্র। ঘটনাস্থলেই মারা যান তাঁরা। এই ঘটনায় তদন্তে নামে জেলা পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল। তাদের তদন্তে সাহায্য করে সিআইডি-ও।
তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, লুটপাটের উদ্দেশ্যেই তিন জনের উপরে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। যদিও তদন্তকারীদের সঙ্গে সহমত নন নিহত মদন পাণ্ডের বড় ছেলে রোহিণী পাণ্ডে। শনিবার তিনি বলেন, ‘‘এই বানজারারা ধরা পড়ায় আমি খুব একটা খুশি নই। কারণ, নিছক ছিনতাইয়ের ঘটনা হলে তাঁরা আমার বাবা-ভাইকে লুট করার পর ছেড়ে দিত। এ রকম নির্মম ভাবে প্রাণে মারত না। এরা ভাড়াটে খুনিও হতে পারে।’’ একই বক্তব্য কানাইয়ের স্ত্রী মামনি পাণ্ডেরও।