ঝালদা পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
ঝালদা পুরসভায় কোন্দলের শেষ নেই। তার জেরে বিভিন্ন সময়ে পুর-পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পুরসভায় সাম্প্রতিক অস্থিরতার কারণে এ বারে সুবর্ণরেখা জল প্রকল্পের কাজ এগনো নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে শহরবাসীর একাংশের মধ্যে। স্থানীয় তথা জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের যদিও দাবি, পুরসভার অভ্যন্তরীণ বিষয়ের প্রভাব ওই প্রকল্পে পড়বে না।
ঝালদার পুরপ্রধান শীলা চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আসার পরে এ নিয়ে জল্পনা শুরু। গত সেপ্টেম্বরে শীলা ও কংগ্রেসের চার পুরপ্রতিনিধি তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে রাজ্যের পুর-বিষয়ক মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে দেখা করেন। তার পরে ওই প্রকল্পে দরপত্র ডাকার কাজ শুরু হয়। তবে এর মাঝে পুরসভায় তৃণমূলের প্রতিনিধিরা দু’শিবিরে ভাগ হয়ে যায় এবং ফের মামলা-মোকদ্দমা শেষে অনাস্থা প্রস্তাব ঘিরে ওই প্রকল্প কতটা বাস্তবের মুখ দেখবে, চিন্তায় শহরবাসীর অনেকে। বাঘমুণ্ডির তৃণমূল বিধায়ক সুশান্ত মাহাতোর যদিও দাবি, “এটা ঝালদার মানুষের স্বপ্নের প্রকল্প। বিরোধীরা যতই বাধা দেওয়ার চেষ্টা করুক, এই প্রকল্প বাস্তবায়নে আমরা বদ্ধপরিকর।” প্রকল্পটি নিয়ে তিনি নিজে তদ্বির করছেন বলে জানান বিধায়ক। পুরসভার অস্থিরতার ছায়া প্রকল্পে পড়বে না বলে আশ্বাস তৃণমূলের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার।
পুরপ্রধানেরও দাবি, প্রকল্পের কাজ থমকে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। নতুন বছরের গোড়া থেকে কাজ শুরু হয়ে যাবে। পুরভবন সূত্রে খবর, পরিকল্পনা অনুযায়ী শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে তুলিনের কাছে সুবর্ণরেখা থেকে জল পরিশোধনের পরে ঝালদায় দু’টি রিজ়ার্ভারে তা প্রথমে মজুত করা হবে। তার পরে পাইপলাইনের মাধ্যমে জল পৌঁছবে শহরের ১২টি ওয়ার্ডের প্রতিটি বাড়িতে। ইতিমধ্যে ওই প্রকল্প ঘিরে ন’টি টেন্ডারও হয়ে গিয়েছে। তবে কাজের অগ্রগতি নিয়ে সন্দিহান বিরোধীরা। জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতোর দাবি, অনেক দিন ধরেই তো ওই প্রকল্পের কথা শোনা যাচ্ছে। সুবর্ণরেখা দিয়েও কত জল গড়িয়ে গেল। শেষমেষ ঝালদার ঘরে ঘরে জল পৌঁছলে এলাকার বাসিন্দা হিসাবে খুশি হবেন। ঝালদার প্রাক্তন পুরপ্রধান তৃণমূলের প্রদীপ কর্মকারেরও কটাক্ষ, এই পুরবোর্ডের কাজ করার সদিচ্ছা নেই।
শীলার তবে দাবি, প্রকল্পের বাস্তবায়নে পুরসভার তরফে কোনও খামতি থাকবে না।