গাজনের মেলায় নাগরদোলায় চেপে প্রাণ খোয়ালেন বাঁকুড়ার তরুণী। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। —প্রতীকী চিত্র।
গাজন মেলা দেখতে বেরিয়েছিলেন। আনন্দ করে নাগরদোলায় চেপেছিলেন। কিন্তু খোলা চুলে নাগরদোলায় বসা কাল হল। নাগরদোলার লোহার বেয়ারিংয়ের খাঁজে আটকে থাকা গোছা চুল খুলি সমেত উপড়ে গিয়ে মৃত্যু হল তরুণীর। বাঁকুড়ার এক্তেশ্বরের ঘটনা। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতার নাম প্রিয়ঙ্কা বাউড়ি।
বাঁকুড়ার প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী এক্তেশ্বর গাজন মেলার শুক্রবারেই ছিল শেষ দিন। সকাল সকাল ভিড় জমে গিয়েছিল মেলায়। পার্শ্ববর্তী ভাদুল গ্রাম থেকে পরিবারের কয়েক জনের সঙ্গে মেলা দেখতে এসেছিলেন প্রিয়ঙ্কাও। এ দিক-ও দিক ঘোরাঘুরির পর সবাই মিলে নাগরদোলায় চেপেছিলেন। আর তখনই বিপত্তি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন নাগরদোলা ঠিক ঘুরতে শুরু করেছে, ওই সময় কোনও ভাবে প্রিয়ঙ্কার খোলা চুল আটকে যায় নাগরদোলার বেয়ারিং এবং ধাতব দণ্ডে। সঙ্গে সঙ্গে আসন থেকে ছিটকে আটকে পড়ে চুল-সহ নাগরদোলার একটি ধাতব দণ্ডে ঝুলতে থাকেন প্রিয়ঙ্কা। কয়েক সেকেন্ড ওই ভাবে ঝুলে থাকার পর আচমকা চুল এবং মাথার খুলির উপরের অংশ শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে প্রায় ২৫ ফুট উপর থেকে মাটিতে পড়ে যান প্রিয়ঙ্কা। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যান স্থানীয়রা। কিন্তু তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হয়। ওই হাসপাতাল থেকে কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় তরুণীর।
এই ঘটনা নিয়ে এক্তেশ্বর মন্দির কমিটির সদস্য লালমোহন দেওঘরিয়া বলেন, ‘‘করোনার জন্য গত কয়েক বছর আমাদের গাজন মেলা বন্ধ ছিল। এ বারই শুরু হয়েছে মেলা। সেই মেলা দেখতে এসে এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল! আমরা সকলেই শোকাহত।’’ অন্য দিকে, মৃতার পরিবার এই দুর্ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছে। ইতিমধ্যে বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।